বনিকসভার বৈঠক। শিলিগুড়ির একটি হোটেলে। ছবি স্বরূপ সরকার।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যের মতো উত্তরবঙ্গকেও আর্থিক সুবিধা দেওয়ার দাবি উঠল বণিকসভা ‘কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজ়’ (সিআইআই)-এর একটি আলোচনাসভায়। শনিবার এই আর্থিক বিষয় সংক্রান্ত আলোচনাসভার আয়োজন হয় শিলিগুড়ির মাল্লাগুড়ির এক হোটেলে। তারা অবশ্য বিষয়টি নিয়ে কোনও রাজনৈতিক বিতর্কে জড়াতে চায় না বলেও স্পষ্ট করে দিয়েছে। এ দিন সভার আলোচনায় উঠে আসে, বিশেষ আর্থিক সুবিধা পেয়ে সিকিমে বিভিন্ন কারখানা, বিশেষ করে ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলো কারখানা করছে। সিকিম এগোচ্ছে। অথচ, লাগোয়া উত্তরবঙ্গের এই অঞ্চল পিছিয়ে থাকছে।
সিআইআই-এর উত্তরবঙ্গ জ়োনের চেয়ারম্যান নরেন্দ্র সি গর্গ বলেন, ‘‘সিকিম, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলো যে আর্থিক সুবিধা পায়, তা পেতে আমরা অনেক দিন থেকেই দাবি জানিয়ে আসছি। আমাদের এখানে বিদ্যুতের দাম দক্ষিণবঙ্গের থেকে বেশি। আমরা তা সরকারকেও জানিয়েছি। শিল্প ক্ষেত্রে তা কমানো হোক। আমরা কোনও রাজনীতিতে যেতে চাই না। আমরা উত্তরবঙ্গের মানুষ হিসাবে সব সময় চাইব, উত্তর -পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলো যে সুবিধা পায়, তা যেন আমরাও পাই। বিষয়টি রাজ্য এবং কেন্দ্রের ব্যাপার।’’ সহমত সিআইআইয়ের উত্তরবঙ্গ জ়োনের ভাইস চেয়ারম্যান প্রদীপ সিঙ্ঘল।
এ দিন ওই সভায় একটি আলোচনা পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সিআইআই-এর এমএসএমই প্যানেলের মোহন দেবনাথ বলেন, ‘‘মানুষ এবং ভূপ্রাকৃতিক বিচারে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে সাদৃশ্য রয়েছে উত্তরবঙ্গের একাংশের। সেখানে কি আপনারা মনে করছেন, এখানে শিল্পোদ্যোগের ক্ষেত্রে একই ছাড় দেওয়া দরকার?’’ উত্তরে সিআইআই-এর প্রবীণ আগরওয়াল বলেন, ‘‘সিকিম এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের অনেক এলাকায় আর্থিক, ভূপ্রাকৃতিক, মানুষজনের মিল রয়েছে। সিকিমে ভৌগোলিক, যাতায়াতের অসুবিধা থাকা সত্ত্বেও ইনসেনটিভের কারণে সেখানে শিল্প হচ্ছে। সিকিমের থেকেও উত্তরবঙ্গের সুবিধা বেশি। বাজার রয়েছে। একাধিক সীমান্ত রয়েছে। তাই এখানে উত্তর-পূর্বের মতো শিল্পে আর্থিক সুবিধা মিললে, শিল্পে উন্নয়ন হবে।’’
তবে সিআইআই-এর তরফে জানানো হয়েছে, রাজ্য সরকার উত্তরবঙ্গে এমএসএমই ক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য বেশ কিছু সদর্থক ভূমিকা নিয়েছে। তাতে কাজ হচ্ছে। তবে নতুন উদ্যোগীরা ব্যাঙ্ক ঋণ পেতে গেলে অনেক ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়েন। এ দিন ব্যাঙ্ক আধিকারিকদের উপস্থিতিতে আলোচনায় সিআইআই-এর উত্তরবঙ্গ জ়োনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান সঞ্জিত সাহা সে প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘‘ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ কী ভাবে উদ্যোগীরা, যাঁরা নতুন কাজ শুরু করতে চান তাঁরা পাবেন, তা পরিষ্কার করে জানানো হোক।’’