ফাইল চিত্র।
ফিরবে না। তবুও যদি-, এই আশাতেই উত্তরাখণ্ড বিপর্যয় কাণ্ডে নিখোঁজ স্বামীর অপেক্ষায় পথ চেয়েছিলেন রেহানাবিবি। মঙ্গলবার উত্তরাখণ্ড সরকার নিখোঁজদের মৃত বলে জানাতেই কান্নার রোল পড়ে যায় অনেশ শেখের গ্রাম, মালদহের ইংরেজবাজার থানার ফুলবাড়িয়া গ্রামপঞ্চায়েতের ভগবানপুরে। পরিবারের আক্ষেপ, শেষবারের মতো দেখা হল না অনেশকে।
পরিবারের দাবি, উত্তরাখণ্ডে তপোবন এলাকার জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে শ্রমিকের কাজ করতেন অনেশ। গত, ১৪ মাস ধরে সেই প্রকল্পেই কাজ করতেন তিনি। তাঁর মেয়ে নাসিমা খাতুন স্থানীয় নঘরিয়া হাই স্কুলে একাদশ এবং ছেলে নাসিব শেখ ওই স্কুলেরই নবম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। নভেম্বর মাসে বাড়ি ফিরে এসে ডিসেম্বর মাসে ফের জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজে যোগ দেন অনেশ। প্রকল্পে কাজ করে তিনি মাসে ২৩ হাজার টাকা বেতন পেতেন। তাঁদের দাবি, ভিন্ রাজ্যে টাওয়ারের কাজ করতেন অনেশ। উত্তরাখণ্ডে কাজে যোগ দেওয়ার পরে হাল ফেরে তাঁদের।
৭ ফেব্রুয়ারি উত্তরাখণ্ডে হড়পা বানের ঘটনায় নিখোঁজ হন জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে কর্মরত অনেশ-সহ বহু শ্রমিক। তাঁর স্ত্রী রেহানা বলেন, ‘‘ঘটনার দিনও সকাল ৯টা নাগাদ স্বামীর সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছিল। এরপর দুপুর ১টার সময় ফোন করলেও আর যোগাযোগ করা যায়নি।’’ এরপরেই সংবাদ মাধ্যমে উত্তরাখণ্ডে হড়পা বানের ঘটনা জানার পরেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন তিনি। নিখোঁজ দাদার হদিশ পেতে উত্তরাখণ্ডে পাড়ি দেন অনেশের দুই ভাই এক্রামুল ও সিকিম শেখ। এক্রামুল বলেন, ‘‘দাদা প্রকল্পের কাজে তিনতলায় ছিলেন। সেই ভবনটি পুরো বসে গিয়েছে। দাদার দেহ উদ্ধারের সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছিল উত্তরাখণ্ড সরকার।’’
তবে আশা ছাড়েনি অনেশের পরিবার। রেহানা বলেন, ‘‘ফিরবে না জেনেও শেষ দেখা দেখতে পাব ভেবেছিলাম।কিন্তু।’’ ছেলে, মেয়ে স্কুলে পড়ে। রেহানা আরও বলেন, ‘‘সংসার চালিয়ে ছেলেমেয়েদের কিভাবে মানুষ করব কিছুই বুঝতে পারছি না।’’ বিধায়ক মোত্তাকিম আলম বলেন, ‘‘ওই পরিবারের পাশে আমরা রয়েছি। প্রশাসনের কাছেও দাবি জানানো হয়েছে যাতে পরিবারকে আর্থিক ভাবে সহযোগিতা করা হয়।’’