—ফাইল চিত্র।
চা শ্রমিকদের বোনাস বৈঠক ‘আংশিক’ ভাবে শেষ হলেও, শ্রমিক বা মালিকপক্ষ পুরোপুরি ঐকমত্যে পৌঁছল না। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত বৈঠকে ১৯ শতাংশ হারে বোনাস নিয়ে চুক্তি হলেও, তাতে যোগ দেয়নি চা বাগান পরিচালকদের দু’টি সংগঠন। বোনাস চুক্তি না মানার কথা ঘোষণা করেছে কয়েকটি শ্রমিক সংগঠনও। এ দিকে, তৃণমূলের চা শ্রমিক সংগঠন বোনাস চুক্তিতে সায় দিলেও, বুধবার গয়েরকাটা চা বাগানের শ্রমিকেরা তৃণমূলের পতাকা হাতে ‘১৯ নয়, ২০ শতাংশ’ হারে বোনাসের দাবিতে মিছিল করেছেন। ধূপগুড়ি থেকে বীরপাড়াগামী ৪৮ নম্বর এশিয়ান হাইওয়ে অবরোধও করেন তাঁরা। দাবি মানা না হলে, ধর্মঘটের হুমকিও দিয়েছেন তৃণমূলের পতাকা হাতে থাকা চা শ্রমিকেরা।
এ দিকে বোনাস বৈঠকের পরের দিনেই কোনও বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই বাগান ছেড়ে চলে গেলেন কালচিনি ব্লকের রায়মাটাং চা বাগান কর্তৃপক্ষ। এ দিন সকালে বাগানের শ্রমিকরা প্রথমে কালচিনি থানায় গিয়ে তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরে, নিমতি মোড় এলাকার জয়গাঁ থেকে আলিপুরদুয়ার-ৃগামী প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভে দেখান। অভিযোগ, ওই বাগানে শ্রমিকদের এক মাসের বেতনও বকেয়া রয়েছে।
গত বছর চা শ্রমিকদের ২০ শতাংশ হারে বোনাস দেওয়া হয়েছিল। এ বছর মালিক পক্ষ প্রথমে সাড়ে আট শতাংশ হারে বোনাস দেবে বলে জানায়। মালিক পক্ষের যুক্তি ছিল, নানা কারণে চা শিল্পে মন্দা চলছে। আগের দু’টি বৈঠকে কোনও রফাসূত্র বেরোয়নি। মঙ্গলবারের বৈঠকে ১৯ শতাংশ বোনাস ঠিক হলেও, সব বাগান পরিচালক সংগঠন তাতে যোগ দেয়নি। চা পরিচালকদের সংগঠন ‘টিপা’ এবং ‘আইটিপিএ’ সংগঠনের প্রতিনিধিরা বৈঠকে ছিলেন না। বৃহস্পতিবার ওই দুই মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে শ্রমিক সংগঠনগুলির বৈঠক রয়েছে।
বোনাস নিয়ে ‘দ্বন্দ্ব’ চলছে শাসকদলের অন্দরেও। এ দিন গয়েরকাটায় ২০ শতাংশ হারে বোনাস দাবি করা গয়েরকাটা চা বাগানের তৃণমূল নেতা সিসিরিয়া খালকো বলেন, ‘‘২০ শতাংশ হারেই আমাদের বোনাস চাই।’’ অন্য দিকে, তৃণমূলের চা বাগান শ্রমিক সংগঠনের চেয়ারম্যান নকুল সোনার বলেন, ‘‘বোনাস বৈঠকে সকলের সম্মতি নিয়েই সিদ্ধান্ত হয়েছে। কাজেই যাঁরা মিছিল সভা করছেন, তাঁদেরও এই সিদ্ধান্ত মেনে চলা উচিত।’’