Jungle Safari

জঙ্গল সাফারির পাস তুলতে সক্রিয় দালাল-চক্র, ক্ষোভ

জলদাপাড়ার জঙ্গলে রবিবার সাফারির পাসের লাইনের সামনে থাকা পর্যটকেরা তা পাননি। অথচ, লাইনের পিছনে থাকা অনেকে পাস পেয়েছেন, এমন অভিযোগে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়।

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:০৫
Share:
বেঙ্গল সাফারি পার্ক।

বেঙ্গল সাফারি পার্ক। —ফাইল চিত্র।

ভোর হওয়ার আগে হয়তো জঙ্গল সাফারির পাস পেতে লাইন দিয়েছেন বন দফতরের কাউন্টারে। টিকিটের জানালা খুললে দেখা গেল, লাইনের সামনে থেকেও সাফারির পাস হাতে পেলেন না সেই পর্যটক। কিন্তু যাঁরা লাইনে দাঁড়াননি, তাঁরাই হুডখোলা গাড়িতে চড়ে সাফারিতে বেরিয়ে গেলেন। ডুয়ার্সের জলদাপাড়া থেকে গরুমারা—একাধিক জাতীয় উদ্যানে গাড়িতে সাফারির পাস নেওয়ার লাইনে দাঁড়িয়ে এমনই অভিজ্ঞতা হচ্ছে পর্যটকদের। অভিযোগ জেনে রাজ্যের বনমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।

জলদাপাড়ার জঙ্গলে রবিবার সাফারির পাসের লাইনের সামনে থাকা পর্যটকেরা তা পাননি। অথচ, লাইনের পিছনে থাকা অনেকে পাস পেয়েছেন, এমন অভিযোগে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। দিল্লি থেকে আসা পর্যটক শুভাশিস মহাপাত্রের ক্ষোভ, ‘‘জলদাপাড়ায় এসেছিলাম, গন্ডার দেখব বলে৷ চার ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও পাস পেলাম না। অথচ, আমার পরে যাঁরা ছিলেন বা লাইনেও ছিলেন না তাঁদের অনেকে পাস পেলেন। এটা কী ভাবে সম্ভব!’’ পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ ডাকতে হয় বন দফতরকে।

বক্সাতে রাজাভাতখাওয়া, জয়ন্তী থেকে সাফারিতে প্রতিদিন পর্যটকদের ভিড় হয়। জলদাপাড়ায় মাদারিহাট থেকে হলং বনবাংলো পর্যন্ত সাফারির চাহিদা সব চেয়ে বেশি। গরুমারায় যাত্রাপ্রসাদ, মেদলা নজরমিনার এবং চাপড়ামারির সাফারির পাস পেতে লাইন পড়ে ভোরের আগে।

পর্যটন সংস্থাগুলির একাংশের দাবি, জঙ্গলে প্রবেশমূল্য নেওয়া যাবে না এমন সরকারি নির্দেশের পরে, অনলাইনে ‘পাস বুকিং’ বন্ধ হয়েছে। তাতেই সমস্যা বেড়েছে। খেলা শুরু হয়েছে দালাল-চক্রের। নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি সাফারিতে গাড়িপিছু এবং পর্যটকদের খরচ মিলিয়ে কম-বেশি ২০০০ হাজার টাকার কাছাকাছি পড়ার কথা। অভিযোগ, ওই ‘চক্র’ আগে থেকেই জঙ্গলে গাড়িতে সাফারির পাস তুলে রাখছে। লাইনে না দাঁড়িয়ে অথবা দেরিতে এসেও কিছু পর্যটক সে পাস পেয়ে যাচ্ছেন টাকার বিনিময়ে। লাইনে না দাঁড়িয়ে পাস পেতে গেলে দালাল-চক্রকে গাড়িপিছু ৫০০ থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত বেশি দিতে হয়। দুর্ভোগ-হেনস্থার শিকার হচ্ছেন নিয়ম মেনে লাইনে দাঁড়ানো পর্যটকেরা।

গত জানুয়ারি মাসে উত্তরবঙ্গ সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, জঙ্গলে ঢোকার জন্য কোনও মূল্য নিতে পারবে না বন দফতর। সেই থেকে গাড়িতে সাফারির জন্য জঙ্গলের প্রবেশমূল্য এবং ‘রোড-চার্জ’ নেওয়া বন্ধ। বক্সা থেকে জলদাপাড়া, গরুমারা, চাপড়ামারির জঙ্গলে গাড়িতে সাফারি পরিচালনা করে যৌথ বন ব্যবস্থাপনা কমিটি তথা ‘জয়েন্ট ফরেস্ট ম্যানেজমেন্ট কমিটি’। তবে পাস বিলির রাশ বন দফতরের হাতেই। বনমন্ত্রী বলেন, “জঙ্গলে ঢুকতে বন দফতর টাকা নেয় না। সাফারির বিষয়টি বাইরে থেকে নিয়ন্ত্রিত হয়। অভিযোগের কথা শুনলাম, নিশ্চয়ই খতিয়ে দেখে
ব্যবস্থা হবে।”

উত্তরবঙ্গের পর্যটন ব্যবসায়ীদের অন্যতম সংগঠনের সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, “বিশৃঙ্খলার খবর পেয়েছি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমরা প্রস্তাব পাঠাব। নিয়মাবলী নিয়ে আলোচনা করে রূপরেখা স্থির করা দরকার।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন