ফাঁকা: কামরায় মদের বোতল। নিজস্ব চিত্র
রাতের ট্রেনে মদ খাওয়া নিয়ে প্রায়শই অভিযোগ ওঠে। এ বার দিনের বেলাতেও শিলিগুড়ি জংশন-বামনহাট প্যাসেঞ্জার ট্রেনে জাঁকিয়ে মদের আসর বসছে বলে অভিযোগ উঠেছে। চলন্ত ট্রেনে কামরা দখল করে মদ্যপান চললেও ট্রেনের অন্য যাত্রীরা ভয়ে প্রতিবাদ করছেন না।
সকাল সওয়া সাতটায় শিলিগুড়ি জংশন থেকে ছেড়ে ডুয়ার্স হয়ে দুপুরে ট্রেনটি পৌঁছয় দিনহাটার বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া বামনহাট স্টেশনে। দুপুরেই সেখান থেকে ছেড়ে সন্ধ্যার আগে ট্রেনটি শিলিগুড়ি জংশনে ঢুকে যায়। যদিও ট্রেনে মদের আসর বসানোর ঘটনা মানতে নারাজ জিআরপি বা আরপিএফ কর্তারা। কিন্তু প্রতিদিনই ট্রেনের কামরা থেকে সাফাই কর্মীরা গাদা গাদা খালি মদের বোতল খুঁজে পাচ্ছেন। এই ঘটনায় যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে উঠেছে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক প্রণবজ্যোতি শর্মা বলেন, ‘‘গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
শনিবার সকালে মালবাজার যাওয়ার জন্য পরিবার নিয়ে শিলিগুড়ি জংশন স্টেশন থেকে বামনহাট প্যাসেঞ্জারে উঠেছিলেন হায়দরপাড়ার বাসিন্দা অমল দাস। তিনি বলেন, ‘‘সামনের দিকে কামরাতে উঠেই দেখি বসার জায়গায় পরে আছে মদের আর ঠান্ডা পানীয়ের বোতল, প্লাস্টিকের গ্লাস, চানাচুরের প্যাকেট। বাধ্য হয়ে অন্য কামরায় গিয়ে বসেছি।’’ ওই ট্রেনের আর এক যাত্রী সাবলু হোসেন বলেন, ‘‘কামরায় মদের বোতল দেখে প্ল্যাটফর্মে নেমে নিরাপত্তারক্ষীদের খোঁজ করেও কাউকে পাইনি।’’
ডুয়ার্সের পাহাড়, জঙ্গলের মধ্য দিয়ে চলাচল করে ট্রেনটি। ওই রুটে দু’টি টানেলও রয়েছে। টানেলের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় অন্ধকার হয়ে যায় গোটা ট্রেন। তা ছাড়া জঙ্গলের মধ্য দিয়ে ধীর গতিতে চলে ট্রেনটি। ফলে কেউ দুষ্কর্ম করে সহজেই ট্রেন থেকে লাফিয়ে পালিয়ে যেতে পারে। যাত্রীদের দাবি, ১০-১২ জন ট্রেনে উঠে একাধিক আসন দখল করে মদের আসর বসায়। পাশাপাশি চলে জুয়া খেলাও। মদ্যপদের কটূক্তিও শুনতে হয় মহিলা যাত্রীদের। ট্রেনে থাকে না নিরাপত্তা রক্ষীও।
শিলিগুড়ি জংশন স্টেশনের আরপিএফের আইসি জি কৃষ্ণাংশু বলেন, ‘‘আগেও ওই ট্রেনে ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছিল। আমরা কড়া ব্যবস্থা নিয়েছি। এ বারের অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।’’