রোগীকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ

দায়িত্বে থাকা নার্সকে রোগী বিস্তারিত ভাবে জানালেও তিনি কেন বিষয়টি গুরুত্ব দেননি, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৯ ০৪:৫৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

সরকারি হাসপাতালে পুরুষ রোগীকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠল বেসরকারি পুরুষ স্বাস্থ্যকর্মীর বিরুদ্ধে। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ওয়ার্ডের শৌচাগারের মধ্যে রোগীর গলায় ব্লেড ধরে এই যৌন হেনস্থা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রোগীর অভিযোগ পেয়ে পুলিশ মামলা রুজু করলেও অভিযুক্ত পলাতক। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

রোগীর পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, গত শনিবার ডেঙ্গিতে আক্রান্ত শিলিগুড়ির গুরুং বস্তির বাসিন্দা ওই রোগীকে জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। হাসপাতালে তাঁকে দেখভালের জন্য প্রথমে একজন মহিলা আয়া রাখা হয়। তবে, পরের দিন সকাল থেকে তাঁর বদলে এক জন পুরুষ কর্মীকে নিযুক্ত করা হয় আয়ার কাজ করতে। যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে ওই পুরুষ স্বাস্থ্যকর্মীর বিরুদ্ধে। পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন রোগী নিজেই। পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক জানান, অভিযুক্তের নামে মামলা রুজু করা হলেও তিনি পলাতক। সিসিটিভি ক্যামেরা দেখে অভিযুক্তকে চিহ্নিত করা হয়েছে।

রোগীর অভিযোগ, তাঁর গায়ে যথেষ্ট জ্বর রয়েছে জানিয়ে রবিবার দুপুরে তাঁর শরীর ‘স্পঞ্জ’ করাতে তাঁকে ওয়ার্ডের শৌচাগারের এক ধারে নিয়ে যান ওই কর্মী। অভিযোগ, স্পঞ্জ করানোর নাম করে রোগীর গলায় ব্লেড ধরে তাঁকে যৌন হেনস্থা করা শুরু হয়। ঘটনার সময় ওই কর্মী তাঁর পায়ের সামনে বসলে সুযোগ বুঝে পা ছুড়ে তাঁকে ফেলে দেন রোগী এবং শৌচাগার থেকে দৌড়ে বেরিয়ে আসেন। ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা নার্সকে সমস্ত কিছু খুলে বলেন বলেও জানিয়েছেন ওই রোগী এবং একই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, নার্স তাঁর কথায় গুরুত্ব দেননি, উল্টে রোগীকেই বকাঝকা করে বিশ্রাম নিতে বলেন। এর পর রোগী তাঁর বাড়ির লোকজনকে বিষয়টি জানালে তাঁরা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়। পুলিশে লিখিত অভিযোগও জানান ওই রোগী।

Advertisement

পুলিশের তরফে হাসপাতাল সুপারকে বিষয়টি জানানো হয়। হাসপাতাল সুপার অমিতাভ মণ্ডল বলেন, ‘‘ওই ঘটনা নিয়ে আমায় কিছু জানায়নি রোগীর পরিবার। তবে খবর পাই। পুলিশও গিয়েছিল। এ ধরনের ঘটনা কোনও ভাবেই কাম্য নয়। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তিন জনের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

ঘটনার পর নিরাপত্তার অভাবজনিত কারণ দেখিয়ে হাসপাতাল থেকে চলে যান ওই রোগী। হাসপাতালের সুপার জানান, ওই ব্যক্তি হাসপাতালের কর্মী নন। আয়াদের মতো রোগীর পরিবারের লোক হিসেবেই ওয়ার্ডে থাকতেন। পুলিশকে ওই ব্যক্তির বিষয়ে হাসপাতালের তরফে বিস্তারিত ভাবে জানানো হয়েছে। ওই ব্যক্তি শিলিগুড়ির বাগরাকোট এলাকায় ভাড়াবাড়িতে পরিবারের সঙ্গে থাকেন।

জেলা হাসপাতালে ওয়ার্ডের মধ্যে এ ধরনের ঘটনায় রোগীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দায়িত্বে থাকা নার্সকে রোগী বিস্তারিত ভাবে জানালেও তিনি কেন বিষয়টি গুরুত্ব দেননি, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও। ওই নার্সের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ করার দাবি তুলেছে রোগীর পরিবার। এ বিষয়ে নার্সদের তরফে কথা বলতে চাওয়া হয়নি। বলা হয়েছে, যা কিছু বলার, হাসপাতালের সুপারই বলবেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement