নিজস্ব চিত্র।
আচমকাই দরজা বন্ধ হিমঘরের। তখনও হিমঘরের সামনে রাস্তায় সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে আলু-বোঝাই কয়েকশো গাড়ি। হিমঘর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, হিমঘরে পর্যাপ্ত আলু মজুত হয়ে গিয়েছে এবং এ বছর নতুন করে আর আলু রাখা যাবে না। এর জেরে বিপাকে অসংখ্য কৃষক। ট্রাকের আলু আর জমিতে থাকা আলু কোথায় রাখবেন, কী করবেন সে-সব নিয়ে, কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বহু কৃষক।
সোমবার রাতে হঠাৎ সব হিমঘর বন্ধ করে বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে প্রবেশপথ আটকে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার সদর ব্লকের ৭৩ মোড় সংলগ্ন দু’টি হিমঘর, মোহিতনগরের একটি হিমঘর এবং বাহাদুর ও পাঙ্গা এলাকায় আরও দু’টি হিমঘর পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি কৃষকদের। আলুচাষি বিশ্বজিৎ দত্ত বলেন, ‘‘সাত-আট দিন ধরে আলু নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে রয়েছে গাড়ি। এখন শুনলাম, হিমঘর ভর্তি!’’
আরেক আলুচাষি দেবব্রত সরকার বলেন, ‘‘আলু রাখতে তো টোকেন দেওয়া হয়েছিল গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যের তরফে। অনেকেই সে টোকেন কিনেছিলেন!’’ এক লরিচালক দিলীপ হাজরা বলেন, ‘‘আমার তিনটি লরিতে প্রায় ২০ লক্ষ টাকার আলু আছে। হিমঘরে আলু না রাখতে পারলে ভাড়া যেমন পাব না, তেমন আলুও পচে যাবে।’’
হিমঘর কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রায় ২০ লক্ষ বস্তা আলু মজুত হয়েছে পাঁচটি হিমঘরে, আর জায়গা নেই। জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি তথা তৃণমূলের খেতমজদুর সংগঠনের জেলা সভাপতি দুলাল দেবনাথ বলেন, ‘‘জেলার ২২টি হিমঘরে তিন লক্ষ ৫০হাজার মেট্রিক টন আলু রাখা যায়। সেখানে প্রায় চার গুণ আলু বেশি রাখা হয়েছে। এই কারণেই সমস্যা।’’ কৃষকদের জন্য তাঁর পরামর্শ, ‘‘কিছু দিন আলু রেখে খুচরো বাজারে বিক্রি করলে আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা কম থাকবে।’’