Coffee

Coffee: কাপে এ বার পাহাড়ি কফি

অঞ্চলের অর্থনৈতিক বিকাশে কফি চাষ নতুন দিশা দেখাতে পারে।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২১ ০৬:৫২
Share:

কফির চারাগাছ। বীজতলার প্রস্তুতি চলছে বিভিন্ন এলাকায়। এখন অপেক্ষা বড় মাপের চাষের। নিজস্ব চিত্র।

দার্জিলিঙের বিশ্বখ্যাত সুগন্ধী চায়ের সঙ্গে এ বার পাল্লা দিতে আসছে ধোঁয়া ওঠা কফি! দার্জিলিং এবং কালিম্পং জেলার বিভিন্ন গ্রামীণ পাহাড়ি এলাকায় পুরোদমে শুরু হয়েছে কফির চাষ।

Advertisement

সাত বছর আগে জিটিএ এবং প্রশাসনের উদ্যোগে পরীক্ষামূলক ভাবে শুরু হলেও বাণিজ্যিক সাফল্য পুরোপুরি আসেনি। এ বার সেই লক্ষ্যেই উদ্যোগী হল রাজ্য সরকারের শিল্পোন্নয়ন নিগম। সঙ্গী হচ্ছে বণিক সভা সিআইআই। গত মঙ্গলবার শিলিগুড়ি এসেছিলেন রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগমের অধিকর্তা তথা প্রাক্তন মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ। ব্যবসায়ী সংগঠনের সঙ্গে বৈঠকে নানা আলোচনার মধ্যে পাহাড়ের কফিকে বিশেষ ভাবে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজে নামার সিদ্ধান্ত চূডান্ত হয়েছে।

রাজীব সিংহ বৈঠকে বলেছেন, ছোট ছোট চাষিদের এক জোট করে সরকারি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বাণিজ্যিক সাফল্য দেখানোর কাজ সরকার এবং শিল্প সংগঠনগুলি করছে। সেখানে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক বিকাশে কফি চাষ নতুন দিশা দেখাতে পারে।

Advertisement

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, কর্নাটক, তামিলনাড়ু, কেরলের মতো রাজ্য থেকে আনা হয়েছে সরকার-স্বীকৃত ১০ লক্ষ কফির চারা গাছ। সেগুলিই বিলি করা হচ্ছে। দার্জিলিঙে চা বাগিচা পাহাড় জুড়ে থাকলেও কালিম্পং জেলায় হাতে গোনা চা বাগান রয়েছে। তার বদলে কালিম্পঙে ধান, মিলেট, ভুট্টা, এলাচ, আদা, তৈলবীজ, আলু, সুপারি, কমলালেবু ক্যাপসিকাম বা বিখ্যাত লঙ্কা ডোলের মতো ফসলের চাষ হয়ে থাকে। করোনা তো বটেই, আর্থিক কারণে ছোট চাষিরা অধিকাংশ সময়ই ফসলের নায্য দাম পান না বলে অভিযোগ।

কালিম্পং জেলার আলগাড়া, গিতবলিং, লোলে, ভালুকপ, সাংসের মতো এলাকায় কফি চাষ চলছে। এ বার তা ছডিয়ে দেওয়া হচ্ছে দার্জিলিং জেলাতেও। বিশেষ করে মিরিক মহকুমায় শুরু হয়েছে কফি চাষ। নাগরি, বুঙকুলুং, ধজিয়া বা মুন্ডা চা বাগান এলাকার চা শ্রমিক নন, এমন ছোট ছোট জমি-মালিকদের কফি চাষে অন্তর্ভুক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। বাণিজ্যিক সাফল্যের লক্ষ্যে একা বা দু’একজন নন, ২০-৪০ জনের ছোট ছোট কো-অপারেটিভ করে রাজ্য সরকারের অনুমোদন করিয়ে কাজে নামানো হচ্ছে। গত কয়েক বছরে দেখা গিয়েছে, পাহাড়ি আবহাওয়া কফির জন্য বেশ ভাল। তাই চাষিদের সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রায় ৩৫০ একরে ১২০০ চাষিকে নিয়ে কফির চাষ শুরু হলেও লক্ষ্যমাত্রা ৫ হাজার রাখা হচ্ছে।

সিআইআই-এর উত্তরবঙ্গের চেয়ারম্যান সঞ্জয় টিব্রুওয়াল বলেন, ‘‘কো-অপারেটিভ পদ্ধতিতে চাষ করে পাহাড়ি চাষিরা অন্য চাষে সাফল্য পেয়েছেন। এ বার কফি চাষের পালা। বহুদিন ধরে অল্পবিস্তর চাষ, পরীক্ষামূলক কাজ হয়েছে। এ বার পুরোদমে বাণিজ্যিক ভাবে করা
হবে।’’

বণিকসভার প্রতিনিধিরা জানাচ্ছেন, পাহাড়ে ৮৭টি বড় চা বাগান রয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৩৫টি বিখ্যাত সুগন্ধী চা তৈরি করে থাকে। দার্জিলিং চায়ের আলাদা ব্র্যান্ডিং করে চা পর্ষদ। কফি বোর্ডের মাধ্যমে দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলায় কফি চাষের প্রসারতা বাড়াতে পারলে চায়ের সঙ্গে দেশের কফির মানচিত্র দার্জিলিং নতুন নাম হিসাবে উঠে আসবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement