Kalchini Tea Garden

চা শ্রমিকদের হাত ফাঁকা, বাগানের ব্যবসায়ীরাও সঙ্কটে

পুজোর আগে থেকে বন্ধ রায়মাটাং ও দলসিংপাড়া চা বাগান। দীপাবলির আগে থেকে বন্ধ হয়ে যায় কালচিনি চা বাগান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালচিনি শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:৩১
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

বোনাস নিয়ে বচসার জেরে, পুজোর মুখে মালিক পক্ষ বাগানে তালা ঝুলিয়ে চলে গিয়েছে। তার পর থেকে প্রায় দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ কালচিনি ব্লকের তিনটি চা বাগান। যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে কালচিনি, দলসিংপাড়া-সহ তার আশপাশের এলাকার ব্যবসায়ীদের রোজগারের উপরে। চা বাগানে ঘেরা কালচিনি ও দলসিংপাড়ার ব্যবসায়ীদের প্রধান ক্রেতা এই চা শ্রমিকেরা। কিন্তু বাগান বন্ধ থাকায় প্রয়োজনের জিনিস কিনতে গিয়েও দাম মেটাতে পারছেন না শ্রমিকেরা। ধার-বাকি বাড়ছে দোকানে। ফলে, বড়দিন বা নতুন বছরে লাভ তো দূরস্থান, মাছি মারছেন চা মহল্লার ব্যবসায়ীরা।

Advertisement

দলসিংপাড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শম্ভু জয়সওয়াল বলেন, ‘‘বাগান বন্ধ থাকায় স্বাভাবিক ভাবেই ব্যবসায় প্রভাব পড়েছে। শ্রমিকেরা বাজারে এলেও, নগদের বদলে বেশিরভাগ বাকিতেই জিনিস কিনছেন। দ্রুত বাগান না খুললে, খুবই সমস্যায় পড়তে হবে ব্যবসায়ীদের।’’

পুজোর আগে থেকে বন্ধ রায়মাটাং ও দলসিংপাড়া চা বাগান। দীপাবলির আগে থেকে বন্ধ হয়ে যায় কালচিনি চা বাগান। শ্রমিকদের বক্তব্য, বর্তমানে তাঁদের হাতে কাজ নেই। ইতিমধ্যেই কাজের সন্ধানে বন্ধ বাগান থেকে শ্রমিকেরা বাইরের যেতে শুরু করেছেন। যাঁরা আছেন, তাদের অনেকেরই এক বেলা খেলে আর এক বেলা খাওয়া জুটছে না।

Advertisement

কালচিনি এলাকার ব্যবসায়ী বিলয় সরকার বলেন, ‘‘কালচিনি, রায়মাটাং-সহ একাধিক চা বাগানের শ্রমিকদের উপরে নির্ভর এই কালচিনি এলাকার ব্যবসায়ীরা। প্রতি বছর বড়দিন বা বর্ষবরণের আগে, শ্রমিকেরা আসতেন সাধ্য মতো কেনাকাটা করতে। কিন্তু এ বছর বাগান বন্ধ হওয়ায়, ক্রেতার সংখ্যা অনেকটাই কমেছে। এই উৎসবের মরসুমেও তেমন বিক্রিবাটা নেই।’’ বাগান বন্ধ হয়ে পড়ে থাকায়, কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার—দু’পক্ষকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে সিটু। সিটুর জেলা সম্পাদক বিকাশ মাহালি বলেন, ‘‘কেন্দ্র ও রাজ্য বন্ধ বাগান নিয়ে উদাসীন। ডুয়ার্সের অধিকাংশ ব্যাবসা এই চা শ্রমিকদের উপরেই নির্ভরশীল। এ ভাবে চলতে থাকলে, হয়তো শ্রমিকদের সঙ্গে-সঙ্গে চা বাগান এলাকার ব্যবসায়ীদেরও কাজের সন্ধানে বাইরে যেতে হবে।’’

বিজেপির চা বাগানের সংগঠন বিটিডব্লিউ-এর সম্পাদক তৌফিল শোরেন বলেন, ‘‘আমরা শ্রমিকদের হয়ে লাগাতার সুর চড়াচ্ছি। নতুন বছরের শুরুতে বাগান না খুললে সকল বন্ধ বাগানের শ্রমিকদের নিয়ে আমরা সড়কে নেমে আন্দোলন করব।’’ তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি বীরেন্দ্র বারা ওঁরাও যদিও অভিযোগ করেন, ‘‘সিটু ও বিটিডব্লিউ বন্ধ বাগান নিয়ে আলোচনায় উদ্যোগী হয়নি। আমারা উদ্যোগী হয়ে শ্রম দফতরে চিঠি লিখেছি এবং শ্রম দফতরের ডাকে বৈঠকও হয়েছে। তবে মালিক পক্ষ না আসায় তা ভেস্তে যায়। ইতিমধ্যে পুরোনো মালিকের লিজ় বাতিল করে বাগানগুলোতে নতুন মালিক আনার আর্জিও জানিয়েছি শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটকের কাছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement