কোথায় তৈরি হবে পঞ্চায়েতের রাস্তা, তা নিয়ে দু’পক্ষ দুই মত। আর এই মতান্তরই গড়ালো সংঘর্ষে। শুক্রবার রাতে তৃণমূলের দু’গোষ্ঠীর সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মালদহের কালিয়াচক থানার তালতলা গ্রাম। ঘটনায় আহত হয়েছেন গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান সহ চারজন।
আহতদের মধ্যে তিনজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পঞ্চায়েত প্রধান আনোয়ার হোসেন চিকিৎসাধীন রয়েছেন স্থানীয় গ্রামীণ হাসপাতালে। রাতে দু’পক্ষই থানায় অভিযোগ দায়ের করে। তবে এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। মালদহের পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলের দু’গোষ্ঠীর এই সংঘর্ষে অস্বস্তিতে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কালিয়াচক ১ ব্লকের সিলামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আনোয়ার হোসেন। বিধানসভা ভোটের আগে তিনি কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। সেই থেকেই বিবাদ শুরু হয় স্থানীয় তৃণমূল নেতা ফারুক শেখের সঙ্গে। গত পঞ্চায়েত ভোটে আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন ফারুকের খুড়তুতো দাদা আনসার আলি। ফলে আনোয়ারকে মেনে নিতে পারেননি ফারুকেরা। দু’মাস আগে কৃষ্ণপুর ডাঙ্গিপাড়া গ্রামে এক লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৫০ মিটার রাস্তা তৈরি করেন পঞ্চায়েত প্রধান আনোয়ার। সেই সময় ফারুকরা রাস্তাটি তাঁদের পাড়ায় করার দাবি জানান। এই নিয়ে বিরোধ শুরু হয়।
অভিযোগ, এ দিন রাতে তালতলা গ্রামের একটি পানের দোকানে বসেছিলেন আনোয়ার হোসেন। আচমকা ফারুকের দলবল তাঁর উপরে হামলা চালায়। বাধা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হন প্রধানের অনুগামী সারিুকুল শেখ, বারেক শেখ ও সাদ্দাম হোসেন। ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রামে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘আগ্নেয়াস্ত্র, হাঁসুয়া নিয়ে আমাদের উপরে ফারুকের দলবল নিয়ে হামলা চালায়। আমি জানিয়েছিলাম আগামীতে তাদের গ্রামের রাস্তা পাকা করা হবে। তবে তারা মেনে নেয়নি। জেলা নেতৃত্বকে পুরো বিষয়টি জানানো হয়েছে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা ফেরার।’’ তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আনসার আলি বলেন, ‘‘এখানে মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছে। তাদের নিজেদের মধ্যে গোলমালের ঘটনা ঘটেছে।’’
তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘‘দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বরদাস্ত করা হবে না। খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’