আগামী ২৫ মার্চ রামনবমী পালনকে ঘিরে উত্তরবঙ্গেও সমরে নেমে পড়েছে তৃণমূল এবং সঙ্ঘ পরিবার। সম্প্রতি কলকাতায় দলীয় বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, জেলায় জেলায় রামনবমী তৃণমূল পালন করবে। তেমনই, অন্য প্রান্তের মতো সঙ্ঘের তরফে উত্তরবঙ্গের প্রতি জেলায় রামনবমী মহোৎসব সমিতি সকাল সকাল শোভাযাত্রা করার প্রস্ততি নিয়েছে।
রামের জন্মদিন পালনকে ঘিরে দুই তরফে এই প্রতিযোগিতা পারদ ক্রমশ চড়ছে। তৃণমূল কী কী ধরনের অনুষ্ঠান করবে, তা নিয়ে দলীয় পর্যায়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। সেখানে শিলিগুড়িতেও বড় মাপের অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছেন সঙ্ঘের নেতারা। তবে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য মিছিল, অনুষ্ঠানের অনুমতি নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে সঙ্ঘের অন্দরে।
প্রচারকদের অনুমান, পুলিশি অনুমতির নামে সংগঠনের অনুষ্ঠান আটকানোর চেষ্টা হতে পারে। মঙ্গলবার দুপুরে শিলিগুড়িতে সদর দফতরে বসে সঙ্ঘের উত্তরবঙ্গের সহ প্রান্ত কার্যবহ তরুণ পণ্ডিত বলেন, ‘‘আমরা গণতান্ত্রিক পথে বিশ্বাসী। কারও সঙ্গে প্রতিযোগিতার বিষয় নেই। পুলিশ অনুমতি দিলে ভাল। না দিলেও অনুষ্ঠান, শোভাযাত্রা হবে।’’
গত কয়েক বছর ধরে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে রামনবমীকে ঘিরে মেরুকরণের রাজনীতি শুরু হয়েছে। গত বছর শিলিগুড়িতে মহোৎসব কমিটির তরফে বিশাল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছিল। সঙ্ঘের প্রচারক, সদস্যরা তো বটেই বিজেপির সকল স্তরের নেতাকর্মীরা তাতে অংশ নেন। এ বারও সেই প্রস্তুতি রয়েছে। চম্পাসারির শ্রীগুরুর বিদ্যামন্দির থেকে সকালে মহোৎসব কমিটির শোভাযাত্রা বার হওয়ার কথা।
পুলিশ সূত্রের খবর, দুই তরফে এখনও কোনও অনুমতির আবেদন জমা পড়েনি। কিন্তু পরীক্ষার মরসুম হওয়ায় মাইক বাজানো, জমায়েত করে রাস্তাঘাট বন্ধ করার বিপক্ষে পুলিশ। তাই সঙ্ঘের মিছিলের অনুমতি কী ভাবে দেওয়া হবে, তা নিয়ে কমিশনারেট স্তরেও আলোচনা চলছে। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার সুনীলকুমার চৌধুরী বলেন, ‘‘পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেব।’’
তৃণমূল অবশ্য ছোট মিছিল, দরিদ্র নারায়ণ সেবা, এলাকায় ভিত্তিক জমায়েত করে রামের জন্মদিন পালনে জোর দিতে চাইছে। দলের দার্জিলিং জেলা কোর কমিটির সদস্য কৃষ্ণ পাল অবশ্য বলেন, ‘‘আমরা রামকে মহান পুরুষ হিসাবে মনে করি। তাই রামের জন্মদিন পালন করা হবে। আর কে কী করবে তা নিয়ে ভাবছি না। পরীক্ষার সময় চলছে। কী ধরনের অনুষ্ঠান হবে তা কয়েক দিনের মধ্যে চূড়ান্ত হবে।’’
সম্প্রতি নাগপুরে সঙ্ঘের অখিল ভারতীয় প্রতিনিধি সম্মেলন হয়েছে। সেখানে দেশব্যাপী বিভিন্ন মাতৃভাষাকে নিয়ে প্রচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উত্তরবঙ্গের প্রান্ত সঙ্ঘ চালক হৃষীকেশ সাহা জানান, ‘‘উত্তরবঙ্গেও আমাদের অনেক ভাষা অবলুপ্তির পথে। সেগুলিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য প্রচার অভিযান চলবে।’’ গত কয়েক বছরে উত্তরবঙ্গে শাখা ও মিলনমণ্ডলী বেড়ে ৮২৭টি হয়েছে। নতুন যুবকেরা এসেছেন প্রায় আড়াই হাজার। তাঁরাই মাতৃভাষা প্রচারের কাজ করবেন।