ফলন ভাল হয়েছে। কিন্তু নোট সমস্যায় মিলছে না দাম। যার জেরে ক্ষতির আশঙ্কায় দিশেহারা মালদহের চাঁচল মহকুমার লঙ্কাচাষিরা। টাকার আকালে দাম পড়ে যাওয়ায় বিঘের পর বিঘে জমিতে গাছেই ঝুলছে লঙ্কা। পরিপক্ক হওয়ার পর বেশিদিন গাছে থাকলে শীতে ও কুয়াশায় লঙ্কা নষ্ট হয়ে যায়। বেশ কিছু জমিতে লঙ্কা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলেও জানাচ্ছেন চাষিরা।
চাঁচল মহকুমায় সব থেকে বেশি লঙ্কা চাষ হয় সামসি এলাকায়। চাঁচলের দামাইপুর, মালতীপুর, ধানগড়া, হরিশ্চন্দ্রপুরের বারদুয়ারি এলাকাতেও লঙ্কা চাষ হয়। সামসি থেকে কলকাতার পাইকারি বাজারেও আসে লঙ্কা। লাভজনক হওয়ায় জমিও বেড়েছিল। চাষিরা জানাচ্ছেন, লঙ্কাচাষে বিঘাপ্রতি খরচ হয় ১৫ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় ফলে প্রায় ১০ কুইন্টাল। অন্য সময় পাইকারি বাজারে কুইন্টাল প্রতি চার হাজার টাকা পাওয়া গেলেও এখন মিলছে এক থেকে দেড় হাজার টাকা।
চাষিরা জানাচ্ছেন, খেত থেকে লঙ্কা তুলতে মজুরি দিতে হয় প্রতি কিলোগ্রামে পাঁচ টাকা। রয়েছে পরিবহণ খরচও। আড়তদারকে মোট বিক্রির সাত শতাংশ কমিশন দিতে হয়। ফলে জমি থেকে লঙ্কা তুলে বিক্রি করার আগ্রহ হারিয়েছেন চাষিরা। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, খুচরো বাজারেও কমেছে দাম। আগে একশো টাকা কেজি দাম উঠলেও এখন তা নেমে এসেছে মাত্র চল্লিশ টাকায়। গৃহস্থের হেঁশেলে লঙ্কা নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মধ্যে পড়ে না। ফলে দাম কমলেও নোটের আকালে ফর্দ থেকে অনেকেই তা বাদ রাখছেন। সামসি তথা জেলার বড় লঙ্কাচাষি মহম্মদ আক্রামুদ্দৌলা এই মরসুমে ১০ বিঘায় চাষ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘স্থানীয় বাজারে চাহিদা নেই। কলকাতাতে লঙ্কা পাঠাই। সেখানেও দাম মিলছে না।’’ জমিতেই লঙ্কা ফলে রেখেছেন বলে জানান তিনি। একই অবস্থা বান্দাকুড়ি এলাকার মহম্মদ ইব্রাহিম, হরিশ্চন্দ্রপুরের বাঙ্গাবাড়ির সুদাম দাস-সহ জেলার সব লঙ্কাচাষিরই।