মাদ্রাসার পরিচালন সমিতির নির্বাচনকে ঘিরে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল মালদহের চাঁচলের থাহাঘাটি এলাকা। প্রধান শিক্ষককে মারধর, প্রিসাইডিং অফিসারকে হুমকি, ব্যালট ছিনতাইয়ের পাশাপাশি জোটের সঙ্গে তৃণমূলের সংঘর্ষ থামাতে ব্যাপক লাঠি চালাতে হল পুলিশকে। নামাতে হল র্যাফ।
রবিবার ছিল চাঁচলের থাহাঘাটি হাই মাদ্রাসার পরিচালন সমিতির নির্বাচন। তৃণমূলের বিরুদ্ধে কংগ্রেস ও সিপিএম জোট বেঁধে প্রার্থী দিয়েছিল। সুষ্ঠভাবে নির্বাচন শেষ হলেও প্রায় মাঝরাতে গণনার প্রায় শেষ পর্বে গন্ডগোলের সূত্রপাত হয়। নির্বাচনে জোটপ্রার্থীদের কাছে ছ’টি আসনেই হারে তৃণমূল। গভীর রাতে ফল প্রকাশের পর প্রধান শিক্ষককে চেয়ার থেকে টেনে ফেলে দিয়ে বেধড়ক পেটানোই নয়, প্রিসাইডিং অফিসারকে হুমকি দিয়ে ব্যালট কেড়ে নিয়ে নির্বাচন ভণ্ডুল করার চেষ্টাও করা হয় বলেও অভিযোগ। আর তা চাউর হতেই বাইরে উভয়পক্ষের সংঘর্ষ বেঁধে যায়। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ছ’জন। দুই তৃণমূল সমর্থকের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে জোটের বিরুদ্ধে। পরে র্যাফ নামিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়। তৃণমূল অবশ্য প্রধান শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে গণনায় কারচুপির অভিযোগ তুলে ফের নির্বাচনের দাবি তুলেছে। তবে সোমবার বিকেল পর্যন্ত কোনও তরফেই অভিযোগ জমা পড়েনি বলে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে।
চাঁচলের এসডিপিও অভিষেক মজুমদার বলেন, ‘‘পরিচালন সমিতির নির্বাচনকে ঘিরে সমস্যা তৈরি হয়েছিল। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’’
প্রধান শিক্ষক মহম্মদ মোসলেউদ্দিন বলেন, ‘‘তৃণমূলের অনেকেই নির্বাচনের আগে থেকে আমার কাছে অন্যায় নানা দাবি নিয়ে এসেছিল। আমি তা মেনে নিইনি বলেই পরিকল্পিতভাবে নির্বাচনের দিন আমাকে আক্রমণ করা হয়। যা ঘটল তাতে আমি আতঙ্কিত। একটু স্বাভাবিক হলেই অভিযোগ জানাব।’’
চাঁচল-১ ব্লক তৃণমূলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইনতাজ হোসেনের অবশ্য দাবি, ‘‘ওরা চারটি আসনে আর আমরা দু’টিতে এগিয়েছিলাম। তখন থেকেই জোটের সমর্থকরা উচ্ছ্বাসে তৃণমূলের পতাকা ছিঁড়ে ফেলে নেত্রীর নামে গালিগালাজ শুরু করে। আমরা তার প্রতিবাদ করাতে আমাদের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে।’’ অলিহন্ডা অঞ্চল কংগ্রেস সভাপতি মহম্মদ আসরাফুল বলেন, ‘‘হার নিশ্চিত বুঝতে পেরে ওরা তাণ্ডব চালিয়ে ব্যালট কেড়ে নির্বাচন বানচাল করতে চেয়েছিল। আর পুলিশ এসে উল্টে আমাদেরকেই লাঠিপেটা করে তাড়িয়ে দেয়।’’