মেলা পিছোলেও জৌলুস একই

রাসচক্র ঘুরিয়ে আজ থেকে শুরু উৎসব

কোচবিহারের রাজ আমলের ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসবের সূচনা হচ্ছে আজ সোমবার। এ দিন সন্ধে সাতটায় কোচবিহার মদনমোহন মন্দিরে বিশেষ পুজোর পর আলতাফ মিঁয়ার তৈরি রাসচক্র ঘুরিয়ে ওই উৎসব শুরু হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৬ ০১:৩৮
Share:

সিসিটিভি ক্যামেরা লাগিয়ে নজরদারি চলছে মদনমোহন বাডি়তে। — হিমাংশুরঞ্জন দেব

কোচবিহারের রাজ আমলের ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসবের সূচনা হচ্ছে আজ সোমবার। এ দিন সন্ধে সাতটায় কোচবিহার মদনমোহন মন্দিরে বিশেষ পুজোর পর আলতাফ মিঁয়ার তৈরি রাসচক্র ঘুরিয়ে ওই উৎসব শুরু হবে।

Advertisement

এই বছরের রাস উৎসব উসকে দিচ্ছে আড়াই দশকের বেশি সময়েরও আগের স্মৃতি। এ বার উপনির্বাচনের জন্য রাসমেলা পিছিয়ে গিয়েছে। ২৭ বছর আগে ১৯৮৯ সালেও নবম লোকসভা নির্বাচনের জন্য রাস উৎসবের নিয়মরক্ষা অনুষ্ঠানের একমাস পর রাসমেলা শুরু হয়েছিল।

উৎসবের আয়োজক কোচবিহার দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ড সূত্রে জানা গিয়েছে, দিনভর উপোস থেকে সন্ধেয় মদনমোহন মন্দিরে বিশেষ পুজোয় বসবেন জেলাশাসক তথা দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের সভাপতি। পুরোহিতের পাশে বসে করবেন মন্ত্র উচ্চারণ। যজ্ঞানুষ্ঠানের পর পঞ্জিকার নির্ঘণ্ট মেনে রাসচক্র ঘুরিয়ে তিনি ওই উৎসবের সূচনা করবেন। এবার কোচবিহার লোকসভার উপনির্বাচনের কারণে অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য নির্বাচন কমিশনের অনুমতি নেওয়া হয়েছে। কমিশনের দেওয়া নির্দেশিকা মেনে সমস্ত অনুষ্ঠান করা হবে।

Advertisement

দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ড সূত্রে জানা গিয়েছে, রাস উৎসব ও মেলা ফি বছর সাধারণ ভাবে এক দিনেই শুরু হয়। এ বারেও প্রাথমিক ভাবে ওই ধারা জারি রাখার কথা ভাবা হয়েছিল। পরে বিভিন্ন মহল থেকে আপত্তি ওঠায় মেলা শুরুর দিন পিছিয়ে দেওয়া হয়। তাতে রাস উৎসবের জৌলুস কিছুমাত্র কমছে না। মদনমোহন মন্দির চত্বর সংস্কার করে রঙ করা হয়েছে। প্রাধান্য পেয়েছে আলোকসজ্জাও। পুতুল ঘরে পুরাণের কাহিনীর খণ্ডচিত্র পুতুলের মাধ্যমে তুলে ধরাও হয়েছে। সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা মেনে পুরো অনুষ্ঠান পর্ব ভিডিও রেকর্ডিং করানোর ব্যবস্থাও থাকছে।

তবে নোট বাতিলের সমস্যা পিছু ছাড়েনি আয়োজকদেরও। সূত্রের খবর, এবার উৎসবের বাজেট ধরা হয়েছে ১১ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকা। অস্থায়ী প্যান্ডেল, বিদ্যুৎ সংযোগ, রাসচক্র তৈরি, পুজোর খরচ থেকে দৈনিক বিশেষ কীর্তন, ভাগবতপাঠ, যাত্রানুষ্ঠানের খরচ সবই তাতে ধরা হয়েছে। যদিও বেশিরভাগ কাজ ওয়ার্ক অর্ডারের মাধ্যমে করা হচ্ছে। কিন্তু কীর্তন, ভাগবতপাঠ-সহ অনুষ্ঠানের শিল্পীদের খরচ নগদে মেটানো নিয়ে উদ্যোক্তাদের চিন্তা বেড়েছে। কোচবিহারের জেলাশাসক তথা বোর্ডের সভাপতি পি উল্গানাথন বলেন, “দ্রুত সমস্ত টাকাই মিটিয়ে দেওয়া হবে।”

দেবোত্তরের এক কর্মী জানিয়েছেন, সব ক্ষেত্রে সমস্যা না হলেও আড়াই লক্ষ টাকার মতো নগদ পাওনা মেটানোই সবথেকে বড় চিন্তার ব্যাপার। পাওনা নিয়ে চিন্তায় রাসচক্রের নির্মাতা আলতাফ মিঁয়াও। তিনি বলেন, “অন্য বার কয়েক দিনের মধ্যে পাওনা পেয়ে যাই। এবার কী হবে জানি না।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement