—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
আর জি করের নির্যাতিতার দেহ উদ্ধারের দিন, ৯ অগস্ট তিনি কোথায় ছিলেন, কার কার সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে জলপাইগুড়ির চক্ষু চিকিৎসক সুশান্ত রায়ের থেকে জানতে চাইল সিবিআই। সিবিআইয়ের তলবে বুধবার সুশান্ত রায় কলকাতার সিজিও কমপ্লেক্সে গিয়েছিলেন। স্বাস্থ্য-শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য-প্রশাসনের অন্দরে প্রভাবশালী চিকিৎসক গোষ্ঠী ‘উত্তরবঙ্গ লবি’র ‘মগজ’ বলে পরিচিত সুশান্ত এ দিন প্রায় তিন ঘণ্টা সিজিও কমপ্লেক্সে ছিলেন। সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘এক ঘণ্টার মতো কথা হয়েছে। ৯ অগস্ট আমি কোথায় কোথায় গিয়েছি, মোটামুটি কখন গিয়েছি—তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’’
আর জি কর হাসপাতালে গত ৯ অগস্ট সুশান্ত রায় গিয়েছিলেন বলে খবর। সুশান্ত দাবি করেছিলেন, রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের সহ-সভাপতি হিসাবে তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। যদিও চিকিৎসকদের একাংশের প্রশ্ন ছিল, আর জি করে নির্যাতিতার দেহ উদ্ধারের পরে মেডিক্যাল কাউন্সিলের কী কাজ, কাউন্সিল কি তদন্ত করবে! আর জি কর হাসপাতালের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের সঙ্গে সুশান্ত রায়ের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে বলে দাবি। সে সূত্রে তথ্য প্রমাণ লোপাটের অভিযোগের সঙ্গে নাম জড়িয়ে যায় সুশান্ত রায়ের। যদিও সুশান্ত সে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। চিকিৎসকদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছিলেন, কেন সুশান্তকে সিবিআই এখনও ডাকছে না। সূত্রের দাবি, সিবিআই প্রথমে মঙ্গলবার তলব করেছিল সুশান্তকে। সুশান্ত রায় জানিয়েছিলেন বুধবার যাবেন।
এ দিন বুধবার সকালে জলপাইগুড়ির কম্পোজ়িট কমপ্লেক্স লাগোয়া বাড়ি থেকে গাড়ি নিয়ে সুশান্ত রায় বাগডোগরা বিমানবন্দরে যান। সেখান থেকে কলকাতায় পৌঁছেই সিজিও কমপ্লেক্সে পৌঁছে যান। তাঁর দাবি, সোমবার তাঁর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন সিবিআইয়ের আধিকারিকেরা। মঙ্গলবার কলকাতায় যেতে বলেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি বলেছিলাম, বুধবার নিজে গিয়ে সব জানাব। কারণ, পুলিশ কেসে অনেক সময় আমাদের যেতে হয়। ওঁরা সম্মান দিয়ে কথা বলেছেন।’’
আর কী জানতে চাওয়া হয়? সুশান্ত রায়ের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য শাখার নির্বাচন নিয়ে বিস্তারিত জানতে চেয়েছে সিবিআই। সুশান্ত এ দিন সিজিও কমপ্লেক্সে যান দুপুর ২টো নাগাদ। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পরে, তাঁকে ডাকা হয় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। দুই অফিসার তাঁর বয়ান নথিভুক্ত করছিলেন। বিকেল ৪টের মধ্যে কথা হয়ে গেলেও তাঁকে অপেক্ষা করতে বলা হয়। বিকেল ৫টা নাগাদ তিনি সিজিও কমপ্লেক্স থেকে বেরোন। আজ, বৃহস্পতিবার তাঁর জলপাইগুড়িতে ফেরার কথা।
এ দিকে, জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের প্রশাসনিক ‘হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ’ থেকে সুশান্তকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। সরকারি কোনও পদে না থাকলেও, তিনি সেখানে কেন ছিলেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। মঙ্গলবার বিকেলে কলেজ কাউন্সিলের বৈঠকেও তা নিয়ে প্রতিবাদ হয় বলে মেডিক্যাল সূত্রের খবর। অবশেষে, কর্তৃপক্ষ ওই ‘গ্রুপ’ বন্ধ করে নতুন ‘গ্রুপ’ চালু করেছে, সুশান্তকে বাদ দিয়ে। মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ প্রবীরকুমার দেব বলেন, "কলেজ ও হাসপাতালের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নন, এমন অনেকেই আমাদের হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে যুক্ত ছিলেন। কলেজ কাউন্সিলের বৈঠকের সিদ্ধান্ত মেনে ওই গ্রুপ বন্ধ করে নতুন করে গ্রুপ চালু করা হয়েছে।"