আদর: ‘ছোট সন্তান’ গুলুর সঙ্গে মমতাদেবী। নিজস্ব চিত্র
নাহ্। শেক্সপীয়র যা-ই বলুন, নামে যথেষ্টই আসে যায়। বিশেষ করে রায়গঞ্জের পুরভোটে তো বটেই।
সবে মঙ্গলবার রাতে ঘোষিত হয়েছে এখানকার পুরভোটে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা। আর বুধবার সকাল থেকেই শহরে গুঞ্জন, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে আসলে কে দাঁড়াচ্ছেন ঘাসফুল চিহ্নে?
শুনে মুচকি হাসছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলর বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর নামেই তাঁর নাম। আর সেই সুবিধাই প্রচারে লাগাতে চাইছেন তিনি। সে জন্য ‘দিদি’কে কিছুটা হলেও অনুসরণ করছেন।
মুখে অবশ্য বলছেন, ‘‘দিদিকে দূর থেকে দেখি। তাঁকে অনুকরণ করার দুঃসাহস আমার নেই। বরং প্রচারে বার হওয়ার আগে তাঁর ছবিতে প্রণাম করে নিচ্ছি।’’
মমতা যা-ই বলুন, তাঁর নাম নিয়ে রাতারাতি কৌতূহল তৈরি হয়েছে রায়গঞ্জে। ৮ বা ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা অনেকেই তাঁকে চেনেন স্বামীর সঙ্গে বেরনোর সুবাদে। কিন্তু শহরের অন্য প্রান্তের লোকজনের প্রশ্ন, কে এই মমতা? আর যাঁরা চেনেন, তাঁরা এ বার মিলিয়ে দেখতে চাইছেন মমতার প্রচার পথ।
এই মমতা কিন্তু নীল-সাদা শাড়ি বা হাওয়াই চটি পরেন না। তবে বুধবার সকাল থেকে মুখ্যমন্ত্রীর মতোই তিনিও হেঁটে প্রচারে নেমে পড়েছেন। তাঁরই মতো ওয়ার্ডের পুরুষ ও মহিলা বাসিন্দাদের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলে এলাকার সমস্যা কী কী, জানার চেষ্টা করছেন। প্রচারের ফাঁকে শিশুদের আদর করতেও ভুলছেন না। আর বলছেন, ‘‘দিদির সঙ্গে নাম মিলে যাওয়াটা তো আমার সৌভাগ্য। জিতলে প্রশাসনিক বৈঠকে ওঁর সঙ্গে কথা বলতে চেষ্টা করব। ওয়ার্ডের জন্য বাড়তি সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করব তখন।’’ একই কথা মনে করেন ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দা এনবিএসটিসি-র কর্মী কৌশিক দে এবং ব্যবসায়ী সুমনকল্যাণ দাসও।
আটপৌরে গৃহবধূ মমতার এক ছেলে। সে বিজনেস ম্যানেজমেন্ট পড়ে। ঘরের কাজ সেরে কাউন্সিলর স্বামীর সঙ্গে বেরিয়ে পড়েন জনসংযোগে। বরুণবাবু জীবন বিমার এজেন্ট। ফলে পেশার সঙ্গে জনসংযোগটা ভাল ভাবেই করা সম্ভব। এত দিনের এই যোগাযোগ এ বারে কাজে আসবে, জানান মমতা।
এ ছাড়াও মমতার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে। তা হল আদরের সেন্ট বার্নার্ডের দেখভাল। ‘‘গুলু তো আমার ছোট সন্তান,’’ বিশাল কুকুরটিকে আদর করতে করতে বললেন মমতা। সে ও তখন যেন মাথা নাড়ছে।