নয়া: পাসপোর্ট কেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র
উত্তরবঙ্গে পাসপোর্ট সেবা লঘু কেন্দ্র চালুর কৃতিত্ব নিতে প্রচারের প্রতিযোগিতা শুরু হল তৃণমূল ও বিজেপি’র মধ্যে। বিজেপির তরফে সোশ্যাল মিডিয়া, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে প্রধানমন্ত্রী এবং সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়ার জন্যই তা সম্ভব হল বলে প্রচার করা হচ্ছে। তবে থেমে নেই তৃণমূলও। কেন্দ্রের পরিকাঠামো গড়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী, পর্যটনমন্ত্রী, এসজেডিএ-কে ধন্যবাদ জানিয়ে শহরে হোর্ডিং, ফ্লেক্স ঝোলানো হয়েছে। ১৮ এপ্রিল শিলিগুড়ির হিমাঞ্চল বিহারে নতুন পাসপোর্ট কেন্দ্রটির উদ্বোধন করার কথা বিদেশ প্রতিমন্ত্রী বিজয়কুমার সিংহের।
কৃতিত্ব নেওয়ার এমন লড়াই অবশ্য নতুন নয়। বর্ধমানের পানাগড়ের বাইপাস কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় উদ্বোধন করার আগেই তা উদ্বোধন করে দিয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক। তেমনই, কয়েকদিন আগে পুরাতন মালদহের একটি গ্রামে ১০ কিলোমিটার রাস্তা উদ্বোধন করেন তৃণমূলের সভাধিপতি সরলা মুর্মু। তার পরে ফের তা উদ্বোধন করে আসেন কংগ্রেস সাংসদ মৌসম বেনজির নূর।
এ বার শিলিগু়ড়িতে এমন ‘লড়াই’ শুরু হয়েছে। তৃণমূল নেতাদের দাবি, কেন্দ্র ছাড়পত্র দিতেই এসজেডিএ পরিকাঠামোর ব্যবস্থা করেছে। চূড়ান্ত হলেও নকশা, পরিকাঠামো অনুমোদনে দেরি হয়েছে। দলের জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘মানুষের কথা ভেবে টানা লেগে থেকে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করেছি। বিদেশ মন্ত্রক যেমন চেয়েছে, তেমনই কাজ করা হয়েছে।’’ বিদেশ মন্ত্রক থেকে চিঠি জেলায় পৌঁছতেই প্রচারে নেমে পড়েছেন বিজেপি নেতারা। সাংসদ অহলুওয়ালিয়া বলছেন, ‘‘কে কী করল জানি না। দিল্লি সরকার বাসিন্দাদের সুবিধার জন্য কেন্দ্রটি চালু করল।’’ এ সব দেখেশুনে বাসিন্দারা বলছেন, ‘‘বিজেপি বা কংগ্রেস সরকার হোক বা তৃণমূল সরকার, কাজ কে করল তা নিয়ে লড়াই চলুক। আদতে তো মানুষের সুবিধাই হলেই হল।’’
২০০০ সালে তৎকালীন ইউপিএ-সরকারের রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিলিগুড়িতে পাসপোর্ট আবেদনপত্র গ্রহণ কেন্দ্র চালু করেন। তাতে উত্তরবঙ্গের বাসিন্দারা নথিপত্র-সহ আবেদনপত্র জমা দিতেন। পরে পুলিশ ভেরিফিকেশনের পর পাসপোর্ট আসত। সেবা কেন্দ্র চালুর কথা বলে ২০১৩ সালে তা বন্ধ হয়। এখন বাসিন্দাদের কলকাতা, গ্যাংটক, বহরমপুর সেবা কেন্দ্রে যেতে হচ্ছে। বিদেশ মন্ত্রক থেকে দেশের আরও ৫টি নতুন কেন্দ্রের সঙ্গে শিলিগুড়ির নাম ঘোষণা হওয়ার পরে বাসিন্দারা আশ্বস্ত হন। তাঁরা জানাচ্ছেন, নতুন কেন্দ্রটি হলে যাতায়াতের ভোগান্তি মিটবে। তিনতলা ভবনে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার স্কোয়ার ফুটে কেন্দ্রটি চালু হচ্ছে। পরিকাঠামোয় খরচ হয়েছে প্রায় ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকা। মাসে ৭২ হাজার টাকায় ভবনটি এসজেডিএ-র থেকে ভাড়া নিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক।