অসমে গিয়ে অপহৃত কোচবিহারের এক ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করল জেলা পুলিশ। পুলিশ জানায়, ওই ব্যবসায়ীর নাম গৌতম পন্ডিত। বাড়ি চকচকার ঝিনাইডাঙা এলাকায়। গত ২৬ অক্টোবর তিনি পরিচিত এক ব্যক্তির সঙ্গে ব্যবসার কাজে অসমে যান। সেখানেই তাকে অপহরণ করা হয় বলে অভিযোগ।
পুলিশ সূত্রের খবর, ব্যবসায়ীর মুক্তিপণ হিসাবে এক কোটি টাকা দাবি করে বাড়িতে ফোন আসে। শুরুতে আলোচনার মাধ্যমে মেটানোর কথা ভাবলেও পরে পুরো বিষয়টি জানিয়ে তাঁরা কোচবিহার কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ জানান। ব্যবসায়ীর খোঁজে তদন্তে অসমে যায় জেলা পুলিশের একটি দল। শুক্রবার কোচবিহার আদালতে ধুবুরির গোলকগঞ্জ এলাকা থেকে অসম পুলিশের সহযোগিতায় ধৃতদের ধরা হয়। ওই ব্যবসায়ীর জবানবন্দিও নেওয়া হয়। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জয়সবাল বলেন, “প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে দুষ্কৃতীরা টাকা আদায়ের ছক কষেছিল। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।”
পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, ধৃতদের নাম উজ্জ্বল দত্ত, নূর জামাল মিঁয়া, সাদিকুল রহমান। উজ্জ্বল দত্তের বাড়ি কোচবিহারের ডাউয়াগুড়ি এলাকায়। নূরজামাল ও সাদিকুলের বাড়ি অসমের ধুবুরী জেলায়। উজ্জ্বল দত্তের সঙ্গে পরিচয়ের সুবাদে কাঠ ব্যবসায়ী গৌতমবাবু অসমে যান। সোনার কারবার করা নিয়ে যোগাযোগের টোপ দিয়ে তাকে সেখানে নিয়ে গিয়ে অপহরণ করা হয়। ফোনে যোগাযোগ করতে না পারায় চিন্তিত পরিজনেরা গৌতমবাবুর খোঁজ শুরু করেন। ওই ঘটনার মধ্যেই গৌতমবাবুর বাড়িতে ফোন করে এককোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করে ফোন করা হয়। পরিবারের লোকেরা অভিযোগ জানালে কোচবিহার কোতোয়ালি থানার সাব ইন্সপেক্টর, মোহিতলাল মন্ডলের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল অসমে যায়। স্থানীয় পুলিশের সাহায্যে তাকে উদ্ধার করা হয়।
গৌতমবাবু ফিরে এলেও গোটা ঘটনায় উদ্বিগ্ন ব্যবসায়ী মহল। কোচবিহার জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুব্রত সাহা বলেন, “বছর দু’য়েক আগেও জেলার এক ব্যবসায়ীকে ধুবুরিতে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছিল। পুলিশ ওই ব্যবসায়ীকেও উদ্ধার করে নিয়ে এসেছিল। এরপরেও ঝিনাইডাঙার ঘটনা জেনে আমাদের চিন্তা বেড়েছে। পুলিশের উদ্যোগে তিনি উদ্ধার হয়েছেন ঠিকই। তবে মাঝেমধ্যে জেলার অনেক ব্যবসায়ীকে কাজে অসমে যেতে হয়। তাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা দরকার।” ফোসিনের সদস্য দিনহাটা মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য রাণা গোস্বামী বলেন, “মাস দুয়েক আগে দিনহাটার এক তামাক ব্যবসায়ী নওগাঁওয়ে গিয়ে নিখোঁজ হন। এ রকম চললে অসমের সঙ্গে ব্যবসায় প্রভাব পড়তে পারে। অনেকেই ঝুঁকি নেবেন না।” পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, দিনহাটার ওই ব্যবসায়ীর খোঁজেও তদন্ত জারি রয়েছে।