দিনহাটা হাসপাতালে আহত মহিলারা।নিজস্ব চিত্র
চোরাকারবারিদের খুঁজতে গিয়ে বাড়ির ভিতরে ঢুকে গ্রামের বাসিন্দা দুই মহিলা-সহ তিন জনকে ব্যাপক মারধর করার অভিযোগ উঠেছে বিএসএফের বিরুদ্ধে। শুক্রবার সকাল ৮টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া দিনহাটা থানার নোটাফেলা এলাকায়। ওই ঘটনায় জখম মহিলাদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জয়সওয়াল বলেন, “ওই এলাকায় একটা গণ্ডগোলের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ সেখানে যায়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।”
নাজিরহাটের ওই এলাকায় পাচারের অভিযোগ রয়েছে। দিঘলটারি ও কালজানি নদী এলাকার বেশ কিছু অংশে কাঁটাতার নেই। রাত নামলেই ওই পথে গরু থেকে শুরু করে নানা জিনিস পাচার শুরু হয় বলে অভিযোগ। বিএসএফের অভিযোগ, এ দিন ওই পথে পাচারের সময়েই চোরাকারবারীদের বাধা দেয় তারা। গ্রামবাসীদের পাল্টা অভিযোগ জানিয়েছেন, বিএসএফের এগারো জনের একটি দল আচমকা কুজরত আলি শেখের বাড়িতে হানা দেয়। কুজরত আলি তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দিল্লিতে থাকেন। দিন কয়েক আগেই তাঁরা গ্রামে ফিরেছেন। তাঁর মেয়ে জহিরন বিবি সে সময় শৌচাগারের দিকে যাচ্ছিলেন। তাঁকে ধরে মারধর শুরু করে বিএসএফ জওয়ানেরা। জহিরনের মেয়ে রশিদা-সহ বাড়ির অন্য সদস্যরা বাধা দিতে গেলে তাঁদেরও মারধর করা হয়। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে জহিরন বলেন, “বার বার বলছিলাম আমাদের কেন মারছেন। তারা কোনও কথা শুনেনি।”
ঘটনার জেরে এলাকার বাসিন্দারা ক্ষোভে ফুঁসছেন। পুলিশে অভিযোগ জানানোর সঙ্গেই প্রশাসনের কর্তাদের কাছেও ওই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আর্জি জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাঁরা। কোচবিহার জেলা পরিষদের সদস্য নাজিরহাট-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা তরণী বর্মন বলেন, “চোরাকারবারীদের বিএসএফ আটক করুক। কিন্তু নিরীহ গ্রামবাসীদের, মহিলাদের এ ভাবে মারধর করা মেনে নেওয়া যায় না।” বিএসএফের এক আধিকারিকের দাবি, “ওই এলাকায় পাচারকারীরা সক্রিয়। প্রতিদিন বিএসএফকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে তারা। মহিলাদের মারধর কররা অভিযোগ ঠিক নয়।”