প্রতীকী ছবি।
চিন বিরোধী বিক্ষোভ নিয়ে ধুন্ধুমার জলপাইগুড়িতে। বিজেপির একাধিক চিন-বিরোধী মিছিল বুধবার জলপাইগুড়িতে আটকে দিয়েছে পুলিশ, এমনই দাবি। সঙ্ঘ পরিবারের ঘনিষ্ঠ আর একটি সংগঠনের চিন-বিরোধী মিছিলের পরিকল্পনা করলেও পুলিশ ধরে তাঁদের নিয়ে যায় বলে দাবি। বিজেপি জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী ও অন্য নেতারা মিছিল করতে গিয়ে গ্রেফতার হন। প্রতিবাদে জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায় বুধবার বিকেলে থানার সামনে অবস্থানে বসেন। বিজেপির জেলা সভাপতির অভিযোগ, “তৃণমূল সরকারের পুলিশ চিন-বিরোধী বিক্ষোভ করতে দিচ্ছে না। শহিদ জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধাও জানাতে দিচ্ছে না। এদের দেশপ্রেম নেই। শুধু রাজনীতি করতেই ব্যস্ত।” পুলিশের দাবি, করোনা পরিস্থিতিতে মিটিং-মিছিল নিষিদ্ধ।
তিন সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে পাল্টা রাজনীতির অভিযোগ তোলে তৃণমূলও। এ দিন বিকেলে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মিছিল, সন্ধ্যায় শহিদ সেনা জওয়ানদের শ্রদ্ধা জানাতে বিজেপির যুব মোর্চার মোমবাতি মিছিলের কর্মসূচি ছিল। সবকটি পুলিশ ভেস্তে দেয় বলে অভিযোগ। চিন সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ে প্রচারে একই সময়ে পথে নেমেছে গেরুয়া শিবির। কিছু কর্মসূচি সরাসরি গেরুয়া পতাকা হাতে নিয়ে, কয়েকটি অরাজনৈতিক মঞ্চ থেকে পরিচালিত হয়েছে। যদিও সবগুলির পিছনে গেরুয়া শিবিরেরই নিয়ন্ত্রণ রয়েছে, দাবি তৃণমূলের। জেলা তৃণমূলের অভিযোগ, এই পরিস্থিতিকে রাজনৈতিক ফয়দা তোলার কাজে লাগাতে নেমে পড়েছে বিজেপি। জেলা তৃণমূলের পাল্টা প্রশ্ন তুলে
প্রচার শুরু হয়েছে, কেন দেশে যখনই সঙ্কট আসে তখনই সীমান্তে যুদ্ধের জিগির ওঠে। গেরুয়া শিবিরের মোকাবিলায় আরও বেশি করে করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তৃণমূল কর্মীদের।
গত লোকসভা ভোটে জলপাইগুড়ি লোকসভা আসনে প্রায় দু’লক্ষের কাছাকাছি ভোটের ব্যবধানে বিজেপি জিতেছিল। তাতেই সঙ্ঘের বিভিন্ন সংগঠন আরও সক্রিয় হয়েছে। জলপাইগুড়ির সাংগঠনিক কাজকর্ম পরিচালনার জন্য কোটি টাকা দিয়ে পেল্লায় অফিসও কিনেছে আরএসএস। এই পরিস্থিতিতে চিন সীমান্ত উত্তপ্ত হতেই সঙ্ঘের সব শিবির একসঙ্গে ঝাপিয়েছে। বিজেপির যুব মোর্চার জেলা সভাপতি শ্যাম প্রসাদ বলেন, “আমরা সীমান্ত শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে মোমবাতি মিছিল করব, এর পিছনেও যারা রাজনীতি খুঁজে পায় তাঁদের সম্পর্কে আমাদের নীরবতাই যথেষ্ট।”
বছর ঘুরলেই লোকসভা ভোট। তার আগে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে রাজ্যের বিভিন্ন পুরসভার সঙ্গে জলপাইগুড়িতেও ভোট হওয়ার কথা। জেলা তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণী বলেন, “দেশে সঙ্কট বা ভোট আসে তখনই সীমান্তে যুদ্ধের জিগির ওঠে। প্রতিবার এই পুনরাবৃত্তি দেখে দেশবাসীও প্রশ্ন তুলছে। সেনাবাহিনী দেশকে সুরক্ষিত রাখে, এর পেছনে বিজেপির কোনও অবদান নেই। করোনা পরিস্থিতিতে আমরা এখন মানুষের প্রয়োজনে মানুষের পাশে রয়েছি।”