শুরু হয়ে গেল বোল্লা কালীর পুজো। — নিজস্ব চিত্র।
উত্তরবঙ্গের শতাব্দী প্রাচীন বোল্লা কালীর পুজো শুরু হয়েছে। দেশ-বিদেশের নানা প্রান্ত থেকে ভক্তেরা হাজির হয়েছেন আরাধ্য বোল্লা মায়ের দরবারে। বস্তুত, বৃহস্পতিবার থেকেই জেলার বাইরে থেকে প্রচুর ভক্ত পুজোয় অংশ নিতে মন্দির প্রাঙ্গনে এসে জড়ো হয়েছেন। আর পুজো উপলক্ষে সেজে উঠেছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট শহর থেকে প্রায় ২৬ কিলোমিটার দূরে বোল্লা গ্রাম।
আস্থায় আস্থা রেখেছে হাইকোর্ট। শুক্রবারই বোল্লা কালীর পুজোয় ১০ হাজার পাঁঠা বলির বিরোধিতা করে জনস্বার্থ মামলার রায় দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ বলেছে, ‘‘উৎসব শুরু হয়ে গিয়েছে। তাই এই পরিস্থিতিতে বলি বন্ধ করা সম্ভব নয়।’’ তবে সমস্ত নিয়ম মানা হচ্ছে কি না তা নজরে রাখা হবে। এই আবহেই শুরু হয়ে গেল পুজো।
রীতি মেনে প্রতি বছর রাসপূর্ণিমার পরবর্তী শুক্রবার বাৎসরিক পুজো অনুষ্ঠিত হয়। সোমবার বিসর্জন। এ বারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। সোমবার পর্যন্ত গোটা এলাকা ঘিরে বসে বিরাট মেলা। এই পুজো এবং মেলার আলাদা স্থান রয়েছে উত্তরবঙ্গে। কথিত আছে, বল্লভ মুখোপাধ্যায় নামে কোনও জমিদারের নাম থেকে অঞ্চলটির নাম হয় বোল্লা। সেখানকার কালীবাড়িতে পূজিতা কালী মূর্তিই বোল্লাকালী নামে বিখ্যাত। প্রায় ১৪ কেজি সোনার গয়নায় প্রতিমাকে সাজানো হয়। আর এ বার প্রতিমার হাতের আঙ্গুলে শোভা পাচ্ছে দু’টি বড় আকারের হিরের আংটি। পুজো উপলক্ষে কয়েক হাজার পাঁঠাকে বলি দেওয়া হয়। তবে এ বার পুজোর উদ্যোক্তারা প্রতীকী হিসাবে গোটা দশেক পাঁঠা বলি দেবেন। ভক্তরা মানত করে যে পাঁঠাগুলি আনবেন তা পুজোর পর আবার তাঁরাই ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন।
বোল্লা কালীর পুজো উপলক্ষে দিনাজপুর তো বটেই, সমগ্র উত্তরবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, অসম থেকে বহু মানুষ এসেছেন। এমনকি, বাংলাদেশ থেকেও অনেকে পুজো দিতে আসেন প্রতি বার। এ বার হাই কোর্টের রায়ের পর সেই উন্মাদনা যেন আরও বেশি।