উদ্বেগ: খুন হয়ে যাওয়া বৃদ্ধের বাড়ির সামনে প্রতিবেশীরা। নিজস্ব চিত্র
বাড়িতেই খুন হলেন এক বৃদ্ধ। তাঁকে খুনের পরে, বাড়িতে লুটপাটও চালানো হয় বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে পুরাতন মালদহের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের আদর্শপল্লি এলাকায়। খুনের রকম দেখে শিউরে উঠেছেন বাসিন্দারা। লুটপাটের মতলবেই খুন, না খুনের নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ রয়েছে তা খতিয়ে দেখছেন মালদহ থানার পুলিশ কর্তারা। মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, “ঘটনার সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম গুণমণি শীল (৭০)। তিনি প্রথম পক্ষের স্ত্রীর ছেলে, বৌমা ও নাতিকে নিয়ে পুরাতন মালদহের আদর্শপল্লির বাড়িতে থাকতেন। তাঁর আরও দুই স্ত্রী রয়েছেন। তবে তাঁদের সঙ্গে তিনি থাকতেন না। এ দিন সকাল থেকে বাড়িতে একাই ছিলেন গুণমণি। স্থানীয়দের দাবি, তাঁর ছেলে পার্থসারথি শীল বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। এ দিনও সকালে বাড়ি থেকে কাজে বেরোন তিনি। চার দিন আগে, তাঁর শ্বশুরের মৃত্যু হয়। তাঁর বর্তমান স্ত্রী ও ছেলে শ্বশুরবাড়িতেই রয়েছেন।
এ দিন রাত ৯টা নাগাদ কাজ থেকে বাড়ি ফিরে আসেন পার্থসারথি। বাড়ির দরজা বন্ধ দেখে ছাদ টপকে ভেতরে ঢোকেন তিনি। অভিযোগ, ঢুকে দেখেন বাড়ির তিনটি ঘর লন্ডভন্ড হয়ে রয়েছে। শোওয়ার ঘরের বিছানায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে গুণমণির নিথর দেহ। ঘটনায় এলাকায় হইচই পড়ে যায়। পুলিশ গিয়ে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদহ মেডিক্যালে নিয়ে যায়। পুলিশের দাবি, বৃদ্ধকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে ৫০টিরও বেশি কোপ মারা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে হাঁসুয়ার কাঠের বাট উদ্ধার হয়েছে। আক্রোশ থেকেই খুন করা হয়ে থাকতে পারে বলে প্রাথমিক অনুমান পুলিশের।
পার্থসারথি বলেন, “বাড়ি ফিরে দেখি, ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ রয়েছে। জানলা দিয়ে উঁকি দিতেই ঘরের লন্ডভন্ড অবস্থা দেখতে পাই। এর পরেই, বাড়ির ছাদ দিয়ে ভিতরে ঢুকি। দেখি, বিছানায় রক্তাক্ত অবস্থায় বাবার দেহ পড়ে রয়েছে।” তিনি বলেন, “কিছু দিন আগে, এলাকায় মাদক সেবনকারীদের সঙ্গে আমাদের গোলমাল হয়েছিল। থানায় অভিযোগও করেছিলাম। মাদক কারবারিরাই বাবাকে খুন করে থাকতে পারে।”
ঘটনায় আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা। পুরপ্রধান কার্তিক ঘোষ বলেন, “শহরের মধ্যে বাড়ির ভিতরে খুনের ঘটনা উদ্বেগের। পুলিশকে ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।”