প্রার্থী বাছাই নিয়ে মালদহে বিজেপির ক্ষোভ প্রকাশ্যে এসেছিল কিছু দিন আগে। দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্দল হয়েও দাঁড়িয়েছেন কেউ কেউ। এই বার রাশ টানতে বিক্ষুব্ধদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত জানাল জেলা বিজেপি। যদিও, দলের নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরেই চলেছেন বিক্ষুব্ধদের একাংশ।
বুধবার নির্দল হয়ে ভোটে দাঁড়ানোয় দুই বিক্ষুব্ধ কর্মীকে বহিষ্কার করার কথা ঘোষণা করেছে বিজেপি। নির্দল ওই প্রার্থীদের সমর্থন করার অভিযোগে ওর্য়াড কমিটির সম্পাদক-সহ চার জন কর্মীকেও বহিষ্কার করা হয়েছে। বুধবার বেলা তিনটে নাগাদ বিজেপির জেলা কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে বহিষ্কারের কথা ঘোষণা করেন দলের রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বপ্রিয় রায় চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘দল বিরোধী কাজ কখনওই সমর্থনযোগ্য নয়। তাই ওঁদের ছ’বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। দলে থেকে দলের ক্ষতি করা বরদাস্ত করা হবে না।’’
সদ্য বহিষ্কৃত বিক্ষুব্ধ কর্মীরা এ দিন পাল্টা অভিযোগ করে দাবি করেছেন, জেলা নেতাদের একাংশ টাকার বিনিময়ে প্রার্থী বাছাই করেছেন। সে কারণে তাঁরা নির্দল হিসেবেই লড়বেন।
প্রার্থী ঘোষণার দিনই বিজেপির মালদহ জেলা কার্যালয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন নেতা কর্মীরা। জেলা নেতাদের ঘিরে বিক্ষোভও হয়। জেলা নেতাদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে ইংরেজবাজার পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সদস্যরা ইস্তফা দেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন ওয়ার্ডে নেতা কর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁদের অভিযোগ ছিল, ওয়ার্ডে কমিটির পাঠানো নাম থেকে প্রার্থী না বেছে, ইচ্ছে মতো বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে।
এই অভিযোগেই ইংরেজবাজার পুরসভার ২৭ নম্বর ওর্য়াডের বিজেপি কর্মী পরিতোষ সরকার ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের শিখা মণ্ডল নির্দল থেকে ভোটে দাঁড়ান। তাঁদের সমর্থন করে ২৩ নম্বর ওর্য়াড কমিটির সম্পাদক গোপাল দত্ত, জিতেন মণ্ডল, নৃপেণ মণ্ডল ও রঞ্জন মণ্ডলরা প্রচার শুরু করেন। তাঁরা প্রচারে নিজেদের বিজেপি কর্মী বলে দাবি করছেন বলে অভিযোগ।
বিজেপির জেলা সভাপতি শিবেন্দু শেখর রায় বলেন, ‘‘আমরা জানতে পেরেছি ওই দুই ওয়ার্ডে নির্দল থেকে যে দু’জন দাঁড়িয়েছেন, তাঁরা নিজেদের বিজেপি প্রার্থী বলে মানুষের কাছে দাবি করছেন। দল বিরোধী কাজের জন্য তাঁদের ছ’বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে রাজ্য নেতৃত্ব।’’ অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘দল যাঁকে মনে করবে, টিকিট তিনিই পাবেন। ভিত্তিহীন সব অভিযোগ তোলা হচ্ছে।’’
তবে বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দাগতে ছাড়েননি বহিষ্কৃত কর্মীরা। দল থেকে বহিষ্কৃত কর্মী তথা ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী পরিতোষ সরকার অবশ্য বলেন, ‘‘এই দল ভোটের আগেই বিক্রি হয়ে গিয়েছে। অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের কাছে অর্থের বিনিময়ে বিক্রি হয়ে গিয়েছেন জেলার নেতারা। প্রচারে দলের নাম ব্যবহার করছি না। আমরা আগেই দল ছেড়ে দিয়েছি।’’