প্রতীকী ছবি।
দলে যাঁরা নতুন এসেছেন তাঁদের এখনই ‘ভরসা’ করতে রাজি নয় বিজেপি নেতৃত্ব। সম্প্রতি রাজ্য থেকে পাওয়া নির্দেশে তেমনেই ইঙ্গিত মিলেছে বলে দাবি নেতাদের। অন্তত তিন বছরের পুরনো সদস্য না হলে তাঁকে সংগঠনের কোনও পদে রাখা যাবে না জলপাইগুড়ি জেলা কমিটিকে নির্দেশ পাঠিয়েছে রাজ্য বিজেপি। নতুন ও পুরনো সদস্যদের মধ্যে যাতে গুলিয়ে না যায় তার জন্য আলাদা হচ্ছে সদস্যপদের ক্রমিক নম্বরও। দলীয় সূত্র অনুযায়ী, যাঁরা পুরনো সদস্য তাঁদের নম্বরের শুরুতে ১ অথবা ২ থাকবে। এ বছরই যাঁরা প্রথম বিজেপির সদস্যপদ নেবেন তাঁদের ক্রমিক সংখ্যা শুরুতে থাকবে ৩। দলে নির্দেশ অনুযায়ী, যে কর্মীদের পার্টি পরিচয় পত্রের নম্বর ৩ দিয়ে শুরু হবে তাঁদের জেলা, ব্লক এমনকী বুথেরও কোনও কমিটিতে রাখা হবে না।
দলের এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে অবশ্য নেতারা প্রকাশ্যে মুখ খুলতে রাজি নয়। একটি সূত্রের দাবি, পদের লোভে দলে যোগদান ঠেকাতেই এই পদক্ষেপ। জলপাইগুড়িতে পঞ্চায়েত ভোটের আগে এক তৃণমূল নেতাকে দলে নিয়েছিল বিজেপি। তাঁর অনুগামীদের নানা পদ দেয় দল, ভোটে টিকিটও দেয়। সেই নেতা ক’দিন আগে ফের তৃণমূলে ফিরে গিয়েছেন। এই ঘটনায় এখনও অস্বস্তি যায়নি জেলা নেতৃত্বের। এমন ঘটনায় ক্ষুব্ধ রাজ্য কমিটিও। জলপাইগুড়ি শহরের কয়েকজন কাউন্সিলর এবং জেলা পরিষদ সদস্য বিজেপিতে যোগ দিতে চাইছেন বলে দাবি। বিজেপি সূত্রের খবর, রাজ্য নেতৃত্ব জেলাকে নির্দেশ দিয়েছে যাঁরাই দলে আসতে চাইবেন তাঁদের প্রথমেই জানিয়ে দিতে হবে যে এখন তাঁরা কোনও পদ পাবেন না।
তাহলে কারা পদ পাবেন?
পুরনো কর্মীদের মধ্য থেকেই পদাধিকারী খুঁজবে বিজেপি। জলপাইগুড়ি জেলায় এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ দুই নেতাকে। সূত্রের খবর, বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক বাপি গোস্বামী এবং জেলা কমিটির নেতা জয়ন্ত চক্রবর্তী সক্রিয় কর্মীদের তালিকা তৈরি করে সরাসরি রাজ্য নেতৃত্বকে পাঠাবেন। সেই তালিকা রাজ্য থেকে ফের জেলায় আসবে। এই পুরো পরিকল্পনাই সঙ্ঘের বলে সূত্রের দাবি। এই কারণেই সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ দুই নেতাকে নেতৃত্ব বাছাইয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ময়নাগুড়িতে যে নেতা বিজেপিতে এসেও তৃণমূলে ফিরে গিয়েছেন, তিনি যে তৃণমূলে ফিরে যাবেন তা আগেই চাউর হয়ে গিয়েছিল। সঙ্ঘের নির্দেশেই তাঁকে দলে রাখার চেষ্টা হয়নি বলে দাবি।
বাপি গোস্বামী এবং জয়ন্ত চক্রবর্তী দু’জনেই এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। সূত্রের খবর, ২০ অগস্ট সদস্য সংগ্রহ শেষ হওয়ার পরে দ্রুত তালিকা পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এক বিজেপি নেতার কথায়, “দলে যাঁরা নতুন আসছেন তাঁদেরকে দলের আদর্শ বুঝতে হবে। দলও তাঁদের পরখ করে নেবে। তার জন্য সময় চাই। দুম করে কাউকে ভরসা করে দল আর ঠকতে রাজি নয়।”