শিলিগুড়ি পুরসভার সামনে বিজেপির বিক্ষোভ। — নিজস্ব চিত্র।
শিলিগুড়ি পুরসভার সামনে পানীয় জলের দাবিতে বিক্ষোভ বিজেপির। শুক্রবার পুরসভার অফিসে সাংবাদিক বৈঠক শুরু করেছিলেন মেয়র গৌতম দেব। বিজেপির বিক্ষোভের কারণে মাঝপথে বৈঠক থামাতে বাধ্য হন তিনি। এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার সময়ও পুরসভার বাইরে বিক্ষোভ চলছে। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি চলছে বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের। এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
শুক্রবার দুপুর ১টায় জল নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করবেন বলে আগে জানিয়েছিলেন মেয়র। সেই মতো বৈঠক শুরুও হয়েছিল। কিন্তু কিছু ক্ষণের মধ্যেই পুরসভার বাইরে জড়ো হন বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা। পানীয় জলের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁরা। নিয়ে আসা হয়েছিল মেয়রের কুশপুতুল। তবে তা দাহ করার আগেই কেড়ে নেয় পুলিশ। বিক্ষোভে বাধা দিলে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় বিজেপির। এই গোলমালের মাঝে বৈঠক থামিয়ে দেন মেয়র। পুরসভার বাইরে অবস্থানে বসেছেন বিজেপির বিক্ষোভকারীরা।
শিলিগুড়ির জলসঙ্কটের মোকাবিলা করার জন্য পুরসভার তরফে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, সাংবাদিক বৈঠকে সে সব নিয়েই কথা বলছিলেন গৌতম। তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার থেকে একাধিক বার ফোন করে শিলিগুড়ির পরিস্থিতির খোঁজ নিয়েছেন। সঙ্কট মোকাবিলার জন্য পাউচ এবং জলের ট্যাঙ্কের পরিমাণও বাড়ানো হচ্ছে। এত দিন দিনে এক লক্ষ পানীয় জলের পাউচ শিলিগুড়িতে বিলি করছিল পুরসভা। এ বার থেকে দুই থেকে তিন লক্ষ পাউচ বিলি করার বন্দোবস্ত করা হবে। এ ছাড়া, এত দিন শিলিগুড়ি পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে ২৬টি জলের ট্যাঙ্ক পাঠাচ্ছিল পুরসভা। সেই সংখ্যা বাড়িয়ে ৫৭ করা হচ্ছে। মেয়র এই নিয়ে কথা বলার সময়েই পুরসভার বাইরে বিক্ষোভ শুরু হয় বিজেপির।
শিলিগুড়ি পুরসভার বাইরে এই মুহূর্তে উত্তেজনা রয়েছে। বৃহস্পতিবার একই দাবিতে পথে নেমেছিল বামেরা। প্রাক্তন মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে শিলিগুড়ি পুরসভার সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছিল। মেয়রের গাড়ি আটকে দেওয়া হয়েছিল ‘চোর চোর’ স্লোগান। যার জেরে অন্য গাড়িতে পুরনিগম ছাড়তে বাধ্য হন মেয়র এবং ডেপুটি মেয়র। শুক্রবার শিলিগুড়িতে বিজেপি পথে নামল।
এ প্রসঙ্গে পুরনিগমের বিরোধী দলনেতা অমিত জৈন বলেন, ‘‘মানুষকে বোকা বানিয়ে ২০ দিন ধরে বিষাক্ত জল খাওয়ানো হল। তার পর নির্লজ্জের মতো এঁরা বলছেন, জল খাওয়া যাবে না। ২০ দিন কেন আটকালেন না তাহলে? ন্যূনতম লজ্জা নেই। অবিলম্বে এঁদের পদত্যাগ করা উচিত। আমাদের পুলিশ বাধা দিচ্ছে। কেন এঁদের বিরুদ্ধে পুলিশ পদক্ষেপ করছে না? পানীয় জলের যে পাউচ বিলি করা হচ্ছে, আবর্জনার গাড়িতে তা আসছে। এটা কী ধরনের ব্যবস্থা? এটা মানা যায় না।’’
সাংবাদিক বৈঠকে মেয়র বলেন, ‘‘আমি মানুষকে যখন জিজ্ঞেস করছি, তাঁরা বলছেন জল নিয়ে তেমন কোনও সমস্যা নেই। সমস্যা শুধু কিছু মিডিয়া এবং রাজনৈতিক দলগুলির হচ্ছে। বিরোধীদের বিক্ষোভে পুরসভার সম্পত্তির ক্ষতি হচ্ছে। আমি বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত পুরসভায় ছিলাম। পরিস্থিতির তদারকি করেছি। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও তিন-চার বার কথা হয়েছে।’’