রাজু বিস্তা
এমসের ধাঁচে শিলিগুড়িতে এক হাজার শয্যার মাল্টি স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল তৈরির দাবি তুললেন দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্তা। বুধবার লোকসভায় বক্তব্য রাখার সময় তিনি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে ওই দাবি রাখেন৷ পাশাপাশি, দার্জিলিং জেলায় মাল্টি ইন্ডাস্ট্রি স্পেশ্যাল ইকনমিক জ়োনের (এসইজেড) দাবিও তুলেছেন। তিনি সংসদে জানান, দার্জিলিং, কালিম্পং এবং উত্তর দিনাজপুর দেশের অনুন্নত জেলারগুলির অন্যতম। এই অঞ্চলের অধিকাংশ বাসিন্দা চা বাগান, কৃষিকাজ এবং বিভিন্ন জঙ্গলের উপর নির্ভরশীল। বাসিন্দাদের মাসিক গড় আয় ৬ হাজার টাকার মধ্যেই। কিন্তু আয় কম হওয়ায় বেশিরভাগই বেসরকারি হাসপাতাল চিকিৎসা করাতে পারেন না। সকলেই সরকারি হাসপাতালের উপর নির্ভর করতে হয়। সেগুলি পরিকাঠামোর অবস্থা তো ঠিকই নেই। উল্টে, প্রতিটি হাসপাতালেই কর্মী কম।
বিজেপি সাংসদের কথায়, ‘‘এই অঞ্চলে সুষ্ঠু চিকিৎসা পরিকাঠামো গড়ে তোলাটা জরুরি। সমস্যা মিটতে পারে এমসের ধাঁচে মাল্টি স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল তৈরি করলে। আমি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে বিষয়টি বিবেচনার আবেদন করেছি। হাজার শয্যার ব্যবস্থা করা হলে উত্তরবঙ্গের এই অঞ্চলের মানুষ উপকৃত হবেন।’’
মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার আগে কেন্দ্রীয় সরকার রায়গঞ্জে এমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির একটি প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেয়। তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, প্রয়াত কংগ্রেস নেতা প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির উদ্যোগে এমসের ধাঁচে হাসপাতালটি উত্তরবঙ্গে হওয়ার কথা ঠিক হয়। কিন্তু জমি জটে প্রক্রিয়া থমকে যায়। তৃণমূলের রাজ্য সরকার সাধারণ মানুষ এবং কৃষি জমি অধিগ্রহণের বিপক্ষে মত দেয়। জটিলতা চলতে থাকে। পরে রাজ্যই কল্যাণীতে তা নিয়ে যাওয়ার জন্য কেন্দ্রকে জানায়। তার পর থেকে উত্তরবঙ্গে এমন বড় মাপের কোনও স্বাস্থ্য পরিকাঠামো আর গড়ে ওঠেনি। দীর্ঘদিন পর দার্জিলিঙের সাংসদ ফের একই দাবি তুললেন।
জেলা বিজেপির নেতারা জানান, দেশের সঙ্গে নিয়মিত রেল, সড়ক এবং বিমান যোগাযোগ একমাত্র উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়িতেই রয়েছে। শিলিগুড়ি সংলগ্ন এলাকায় খুঁজে দেখলে জমিও মিলবে। এমসের ধাঁচে হাসপাতালের জন্য তাই শিলিগুড়ি উপযুক্ত এলাকা। সাংসদ এ দিন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের পরিকাঠামো নিয়ে সংসদে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি মেডিক্যাল কলেজ ঘুরে দেখে অবাক হয়েছি। রোগীদের অবস্থা সেখানে খুবই শোচনীয়।’’
এর আগেই দার্জিলিঙে মাল্টি ইন্ডাস্ট্রি স্পেশ্যাল ইকনমিক জোনেরও দাবি তুলেছেন সাংসদ। তিনি বলেন, ‘‘এই এলাকায় এডুকেশন হাব হিসেবে তৈরি হয়েছে। তরুণ-তরুণীরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে কর্মরত। আমাদের ছেলে মেয়েদের দক্ষতা অন্য রাজ্যে কাজে লাগছে। এসইজেড করা গেলে কর্মসংস্থান ছাড়াও এলাকার আর্থিক ও পরিকাঠামোগত উন্নয়ন হবে। একাধিক সীমান্ত এবং সমস্ত ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা দার্জিলিং জেলাতেই রয়েছে।’’