শিলিগুড়িতে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র।
নিজেরা সরকার গড়ার জায়গায় নেই, তবে রাজ্যের আগামী সরকার গঠনে দলের প্রভাব থাকবেই বলে দাবি করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
উত্তরবঙ্গে দলের প্রার্থী এবং নেতাদের নিয়ে শুক্রবার শিলিগুড়িতে ভোট গণনার প্রশিক্ষণ শিবির আয়োজিত হয়। শিবিরে যোগ দিতে শিলিগুড়ি এসেছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি। দল সূত্রের খবর, শিবিরে বক্তব্য রাখার সময়ে দিলীপবাবু দাবি করেন, রাজ্যের আগামী সরকার গঠনে বিজেপি নির্ণায়ক ভূমিকা নেবে। ভোটের পরে রাজ্যে দলের গুরুত্ব আরও বাড়বে বলেও তিনি দাবি করেন।
পরে সংবাদমাধ্যমের কাছেও রাজ্য রাজনীতিতে আগামী দিনে ‘নতুন সমীকরণ’ দেখা যাবে বলে দিলীপবাবু দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘ভোটের ফল বের হলে নতুন বিজেপিকে দেখতে পাবেন। রাজ্য রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ দেখা যাবে। আগামী সরকার গঠনে বিজেপির প্রভাব থাকবে।’’
রাজ্যে দলের আসন সংখ্যা যে খুব একটা বেশি হবে না তা এ দিন স্বীকার করে নিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তবে দলের আসন এবারই প্রথম দু’অঙ্কে অর্থাৎ দশ অথবা তার বেশি হতে পারে বলে দাবি করেছেন। বিজেপি নেতাদের দাবি, সে ক্ষেত্রে দল যে সরকার গঠনে ‘উদাসীন’ থাকবে না সে কথাই এ দিন দলের রাজ্য সভাপতি বুঝিয়ে দিয়েছেন।
রাজ্যে ভোট প্রচারে শুরু থেকেই বিরোধীরা তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে গোপন বোঝাপড়ার অভিযোগ করেছেন। তৃণমূলকে সুবিধে করে দিতেই বিরোধী ভোটে ভাঙন ধরিয়েছে বিজেপি। এ দিন অবশ্য তৃণমূলের সঙ্গে ভোট পরবর্তী সমঝোতার সম্ভাবনা রয়েছে কিনা জানতে চাইলে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘তৃণমূল একসময়ে আমাদের জোটসঙ্গী ছিল। তবে সেই অভিজ্ঞতা সুখের ছিল না। দেখা যাক পরিস্থিতি কী হয়।’’
দলের কর্মী-সমর্থকদের একাংশের দাবি, এবার তৃণমূলের ভোট যে ব্যাপক হারে কমবে তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই। সে কারণেই ভোটের ফল বের হওয়ার আগেই তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতার দরজা পুরোপুরি বন্ধ না করে দিয়ে, ‘নতুন সমীকরণের’ বার্তা দিলেন রাজ্য সভাপতি।
একদিকে রাজ্য রাজনীতি নিয়ে বার্তা, অন্যদিকে স্থানীয় স্তরে দলের সংগঠন গোছানোর কথাও এ দিন জানিয়ে দিয়েছেন দিলীপবাবু। ভোটের ফল বের হওয়ার পরে নেতা-কর্মীরা ‘আগের মতো’ চললে বরদাস্ত করা হবে না বলেও রুদ্ধদ্বার সভায় বার্তা দিয়েছেন তিনি।
সভায় দলের প্রার্থীদের অনেকেই অভিযোগ করেছেন, সব নেতা-কর্মীর থেকে সমান ভাবে সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। উত্তর দিনাজপুর, জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার জেলার কয়েকজন নেতা এবং প্রার্থীর অভিযোগ শুনে দিলীপবাবু দাবি করেন, তার কাছে আগেই নানা অভিযোগ পৌঁছেছে। প্রার্থীদের কাছে তিনি বন্ধ খামে রিপোর্ট চেয়েছেন।
কোন নেতা সহযোগিতা করেননি, কার জন্য সমস্যায় পড়তে হয়েছে সব তিনি লিখে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। কড়া পদক্ষেপ গ্রহণের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি। তবে উত্তরবঙ্গের নেতাদের একাংশের প্রশ্ন, নানা গোষ্ঠী উপগোষ্ঠীতে জীর্ণ দলে আদৌও কড়া পদক্ষেপ সম্ভব হবে তো?