সুকান্ত মজুমদার। —ফাইল চিত্র।
শহরের রাস্তায় প্রায় দু’কিলোমিটার মিছিলের পরে বিকেলের ব্যস্ত সময়ে জলপাইগুড়ির ব্যস্ততম রাস্তার ঠিক মাঝখানে করা মঞ্চে সভা করল বিজেপি। জলপাইগুড়ি শহরের প্রাণকেন্দ্র কদমতলার রাস্তায় ডিবিসি রোড আটকে সেই সভায় বক্তব্য রাখলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। মঞ্চ থেকে জেলা তৃণমূল নেতা এবং পুলিশ-প্রশাসনকে আক্রমণ করেন সুকান্ত। পাশাপাশি, আগামী লোকসভা ভোটের দলের সর্বভারতীয় ইস্তাহারে উত্তরবঙ্গে একটি ‘এমস’ হাসপাতাল গড়ার কথাও উল্লেথ থাকবে বলে
দাবি করেন।
এ দিনের সভায় উত্তরবঙ্গকে বঞ্চনার অভিযোগ তোলেন সুকান্ত। রায়গঞ্জে ‘এমস’-এর ধাঁচে হাসপাতাল গড়ার প্রস্তাবের প্রসঙ্গ তুলে সুকান্তের অভিযোগ, “উত্তরবঙ্গের কথা আগে কেউ ভাবত না। রাজ্যে একটি এমস দেওয়া হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী সেটা কল্যাণীতে নিয়ে চলে গিয়েছেন।’’ ভোট প্রতিশ্রুতির ঢঙে তিনি বলেন, “তাই আমরা সব সাংসদেরা এবং আমি ব্যক্তিগত ভাবে নরেন্দ্র মোদীকে অনুরোধ করেছি, আগামী লোকসভা ভোটে আমাদের যে ইস্তাহার তৈরি হবে, তাতে যেন দলের তরফে উত্তরবঙ্গের একটি এমস হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করার কথা যেন থাকে।” যা নিয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি মহুয়া গোপ বলেন, “উত্তরকন্যা থেকে উত্তরবঙ্গের যা উন্নতি সব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে হয়েছে। বিজেপির এত জন সাংসদ এত দিনে কী করলেন?”
সুকান্ত এ দিন বলেন, “জলপাইগুড়িতে এত চোর জানতাম না! লম্বা তালিকা।” এর পরেই একে একে জলপাইগুড়ি পুরসভার উপপুরপ্রধান সৈকত চট্টোপাধ্যায় থেকে মালবাজারের পুরপ্রধান স্বপন সাহা, ধূপগুড়ি পুরসভার প্রশাসক গুড্ডু সিংহ, তৃণমূলের কৃষক সংগঠনের সভাপতি দুলাল দেবনাথ, ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির তৃণমূল নেতা দেবাশিস প্রামাণিক, মালবাজারের নেতা বাবুয়া প্রসাদের নাম শোনা যায় সুকান্তের মুখে। তিনি বলেন, “চাকরি চুরি থেকে কয়লা-বালি চুরি হচ্ছে। আমি বিজেপির জেলা সভাপতি, সাংসদকে বলব, তথ্যপ্রমাণ দিন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে জানিয়ে সকলকে জেলে পাঠানোর ব্যবস্থা করব।”
দম্পতিকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা মামলায় অভিযুক্ত সৈকত চট্টোপাধ্যায় কেন পুরসভার পদে থাকবেন সে প্রশ্ন তুলেছেন সুকান্ত। যার পাল্টা সৈকত বলেন, “সুকান্তবাবুকে ধন্যবাদ জানাই, আইনি বিষয়ে অজ্ঞতা প্রকাশ্যে তুলে ধরার জন্য। উনি যে আইনের কথা তুলে এই অভিযোগ করলেন, সে ধরনের অভিযোগে তো দেশের বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীরও পদে থাকার অধিকার থাকে না।’’
সুকান্তের মুখে জেলার এক থানার আইসি-র নামও শোনা গিয়েছে। এ দিন রাস্তা আটকে সভা হলেও পুলিশ কেন পদক্ষেপ করেনি তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “সভার অনুমতি দেওয়া হয়নি। মামলা করা হবে। রাজনৈতিক আক্রমণের জবাব পুলিশ দেয় না।” সভার শুরুতে বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামীর দাবি, পুলিশের কাছে অনুমতি চাইলেও, পুলিশ সভা করার অনুমতি দেয়নি, তাই রাস্তা আটকে সভা হয়েছে।