ধৃত: গ্রেফতারের পর বিজেপি নেতা রতন তরফদার। নিজস্ব চিত্র
করোনাভাইরাস নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপত্তিকর মন্তব্য করায় গ্রেফতার বিজেপির জেলা সম্পাদক রতন তরফদার। তাঁকে মঙ্গলবার বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠাল আদালত। এ দিন আলিপুরদুয়ার আদালত এই নির্দেশ দেয়। সোমবার বিকেলে আলিপুরদুয়ার শহর থেকে রতনকে গ্রেফতার করেছিল আলিপুরদুয়ার থানার পুলিশ। তাঁর এই গ্রেফতারি নিয়ে ইতিমধ্যেই তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে কাজিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে।
করোনাভাইরাস নিয়ে ইতিমধ্যেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। যে আতঙ্ক থেকে বাদ নেই উত্তরের জেলা আলিপুরদুয়ারও। সম্প্রতি ভুটানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এক মার্কিন নাগরিকের সন্ধান মেলে। তার সঙ্গে একই বিমানের যাত্রী আলিপুরদুয়ার জেলার এক ব্যক্তি ও তাঁর সঙ্গে ভুটানে হোটেলের ঘরে থাকা জেলার আর এক ব্যক্তিকে ফালাকাটা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। করোনাভাইরাস নিয়ে আলিপুরদুয়ারের ওই হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ড খুলেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।
করোনাভাইরাস নিয়ে পরপর এমন ঘটনায় আলিপুরদুয়ারে মানুষের মধ্যে চিন্তা বাড়ছিলই। এরই মধ্যে করোনাভাইরাস নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ফেসবুকে একটি আপত্তিকর মন্তব্য পোস্ট করার অভিযোগ ওঠে আরএসএস-ঘনিষ্ঠ বিজেপির জেলা সম্পাদক রতন তরফদারের বিরুদ্ধে। পুলিশ সূত্রের খবর, গত ৬ মার্চ ফেসবুকে ওই পোস্টটি করেন রতন। যা নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ জমা পড়ে। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই সোমবার রতনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জেলার পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ায় ধৃত ব্যক্তির মন্তব্য নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় উত্তেজনা হওয়ার আশঙ্কা ছিল। সেজন্যেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ পুলিশ সূত্রের খবর, ফেসবুকে ওই নেতার মন্তব্যটি ইতিমধ্যেই মুছে দেওয়া হয়েছে।
তবে এই ঘটনাকে ঘিরে ইতিমধ্যেই আলিপুরদুয়ারে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়ে গিয়েছে। তৃণমূলের জেলা নেতা মোহন শর্মা বলেন, ‘‘বিজেপি দলটাই আসলে গোটা দেশে করোনাভাইরাসে পরিণত হয়েছে। তাই তাদের দলের নেতারা সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন মন্তব্য করে চলছেন।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা বলেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ায় যে পোস্টটির কথা বলা হয়েছে সেটা দল সমর্থন করে না। কিন্তু ওই পোস্টটি আমাদের দলের নেতা রতন তরফদার করেছেন বলে আমরা বিশ্বাস করি না। কারণ, তৃণমূলের নির্দেশে সব সময় পুলিশ যে কোনও ছুতোয় পুলিশ আমাদের নেতাদের গ্রেফতারের চেষ্টা করে। ওই পোস্টটি আসলে কে করেছেন, সেটা আগে প্রমাণ হওয়া জরুরি।’’
রতনের আইনজীবী সোমশংকর দত্তও বলেন, ‘‘মনে হচ্ছে ওঁর ফোনটি ব্যবহার করে কেউ বা কারা সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই পোস্টটি করেছেন।’’