জখম: মারধরে আহত হয়ে শিলিগুড়ি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিজেপি কাউন্সিলর মালতী রায়। নিজস্ব চিত্র
পুলিশের সামনেই দলের কাউন্সিলর মালতি রায়কে মারধর, হেনস্থা ও তাঁর বাড়ি থেকে টাকা লুঠে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে প্রায় দু’ঘণ্টা প্রধাননগর থানা ঘেরাও করে রাখল বিজেপি। বুধবার সন্ধ্যায় এই নিয়ে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি, বচসাও হয় বিজেপি নেতা কর্মীদের। দলের জেলা সভাপতি প্রবীণ অগ্রবাল দোষীরা গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত থানা থেকে ঘেরাও উঠবে না বলেও হুমকি দেন। পরে থানার আইসি ও এসিপি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। বিজেপি নেতারা পুলিশকে ২৪ ঘণ্টা সময় দেন।
প্রবীণ অগ্রবালের অভিযোগ, ‘‘অভিযুক্তরা সকলে তৃণমূলের নেতা বলে ওয়ার্ডে পরিচিত। পুলিশকে আগে জানালেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’’ তিনি জানান, দিনের বেলায় বাড়িতে ঢুকে একজন জনপ্রতিনিধিকে যে ভাবে মারধর করা হয়েছে, তা ভাবাই যায় না। শহরে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি একেবারে ভেঙে পড়েছে। কাউন্সিলর মালতিদেবীর ছেলে কিংশুক রায় এ দিন সন্ধ্যায় তিনজনের নামে থানায় অভিযোগ করেন।
এই প্রসঙ্গে পুলিশ কমিশনার নীরজ কুমার সিংহ বলেন, ‘‘নাগরিক পরিষেবা নিয়ে কাউন্সিলরের বাড়িতে লোকজন গিয়েছিলেন। পরে তাঁকে হেনস্থার অভিযোগ রয়েছে। আমরা তদন্ত শুরু করেছি। তাতে কেউ দোষী হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
ঘটনার সূত্রপাত দুপুরে। পানীয় জল, সাফাই পরিষেবা মিলছে না অভিযোগ তুলে একদল লোক বিজেপি কাউন্সিলর মালতি রায়ের বাড়িতে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। কাউন্সিলর সে সময় অফিসে বসে কাজ করছিলেন। অভিযোগ, তাঁকে ঘিরে ধরে নানা রকম কটূক্তি করতে থাকে জনতা। মালতিদেবী
ছেলে কিংশুক বাড়িতে ছিলেন। কাউন্সিলর ওয়ার্ড কমিটির সম্পাদক পঙ্কজ কামতিকে খবর দেন। তিনি পুলিশ ডাকেন।
কিংশুকের অভিযোগ, ‘‘মাকে টেনে হিঁচড়ে চড় মেরে, ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়। ঘর থেকে ৫০ হাজার টাকা লুঠ করে নেওয়া হয়। পুলিশের সামনেও হেনস্থা চলে। মা অসুস্থ হয়ে পড়েন। বাবাকে ফোন করে ডাকি। অ্যাম্বুল্যান্স
এলে মাকে হাসপাতালে নিয়ে
যাওয়া হয়। চিকিৎসক সিসিইউ’কে ভর্তি করে নেন।’’
ঘটনার কথা জেনে হাসপাতালে যান মেয়র অশোক ভট্টাচার্য-সহ মেয়র পারিষদ এবং কাউন্সিলরদের অনেকেই। যান পুরসভার কংগ্রেসের পরিষদীয় নেতা সুজয় ঘটকও। তৃণমূলের বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকার, রঞ্জন শীলশর্মারাও যান। ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন মেয়র। তিনি বলেন, ‘‘লজ্জাজনক ঘটনা। পুলিশ কমিশনারকে বলেছি বিষয়টি দেখতে। মুখ্যমন্ত্রীকেও চিঠি লিখব।’’ পুরসভার বিরোধী দলনেতা রঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘আমরাও ঘটনার
নিন্দা করছি। দলের কেউ যুক্ত কি না দেখা হবে। পুলিশ তদন্ত করবে।’’