—ফাইল চিত্র
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদে অচলাবস্থা কাটানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার গঙ্গারামপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে তিনি জেলাশাসককে নির্দেশ দিয়েছিলেন—তৃণমূলের ১৩ জন সদস্যের সঙ্গে বৈঠক করেই উন্নয়নের কাজ চালিয়ে যেতে হবে।
তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করে কাজের প্রস্তুতি নিল জেলা প্রশাসন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের এই উদ্যোগ ঘিরে জেলা জুড়ে চর্চা শুরু হয়েছে।
প্রশ্ন উঠেছে, জেলা পরিষদের মতো একটি স্বশাসিত নির্বাচিত সংস্থায় সভাধিপতিকে এড়িয়ে কী ভাবে কাজ করবে প্রশাসন? পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী, জেলা পরিষদের সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী হলেন সভাধিপতি। প্রতিটি স্থায়ী সমিতির প্রধানও তিনি। সভাধিপতির সম্মতি ছাড়া স্থায়ী সমিতির নেওয়া সিদ্ধান্তও কার্যকর করা যায় না। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের ১৮ জন সদস্যের মধ্যে তৃণমূলের হাতে ১৩ জন সদস্য থাকলেও, সভাধিপতি রয়েছেন বিজেপি শিবিরে।
তবে তৃণমূল শিবির ওই যুক্তি মানছে না। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলে সভাধিপতি ছাড়াই উন্নয়নের কাজ করা যায়। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষ বলেন, ‘‘যে কোনও স্বশাসিত সংস্থায় জেনারেল বডিই হচ্ছে শেষ কথা। সেখানে কোনও সিদ্ধান্ত হলে সভাধিপতির সম্মতি না থাকলেও কাজ করা যায়।’’ ওই যুক্তিতেই বুধবার জেলা পরিষদের সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করে রাস্তা সংস্কারের জন্যে প্রায় ২০ কোটি টাকার টেন্ডার দেওয়ার তোড়জোড় শুরু করে তৃণমূল শিবির। জেলা পরিষদের অধীনে থাকা রাস্তাগুলির সংস্কারের জন্য ওই টেন্ডার বৃহস্পতিবার বের হচ্ছে বলে খবর।
যদিও তৃণমূলের দাবি উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি শিবির। বিজেপির পালটা যুক্তি— স্বশাসিত সংস্থায় সব সময় সংখ্যার জোর খাটে না। যেহেতু সভাধিপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার সময় হয়নি, তাই এখনও পর্যন্ত সভাধিপতিই জেলা পরিষদের সর্বেসর্বা। তাঁর সিদ্ধান্ত ছাড়া কোনও কাজই তৃণমূল শিবির করতে পারবে না। সভাধিপতিকে এড়িয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তা পঞ্চায়েত আইনবিরুদ্ধ কাজ হবে বলে গেরুয়া শিবিরের দাবি।
বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী বিপ্লব মিত্র বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত আইনে পরিষ্কার এই বিষয়টি উল্লেখ করা রয়েছে। তাই আইনবিরুদ্ধ কাজ করা হলে আইনের মাধ্যমেই তার জবাব দেওয়া হবে।’’