হুড খোলা জিপে অর্পিতা, শঙ্কর, বিপ্লব। ছবি: অমিত মোহান্ত।
দলনেত্রীর নির্দেশে দলের মধ্যে যুযুধান দুই নেতা হুড খোলা জিপে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে ঐক্যের বার্তা দিলেন বালুরঘাটে। বৃহস্পতিবার হুড খোলা গাড়িতে প্রাক্তন মন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী এবং সাংসদ অর্পিতা ঘোষকে পাশে নিয়ে আগামী পঞ্চায়েত ভোটে একজোট হয়ে লড়াইয়ের জন্য দলের কর্মীদের উদ্দীপ্ত করার চেষ্টা করলেন বিপ্লব মিত্র। যা দেখে উচ্ছ্বসিত সাংসদ অর্পিতা ঘোষ বলেন, ‘‘বিরোধীরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে হাত নেড়েছেন। তারা দেখলেন তৃণমূল গোল দিয়ে বেরিয়ে গেল। বিপ্লব মিত্রের নেতৃত্বে আগামী পঞ্চায়েত এবং লোকসভা জিতে দল দেখিয়ে দেবে দক্ষিণ দিনাজপুর তৃণমূলের এক নম্বর জেলা।’’
তৃণমূল জেলা সভাপতির পদ ফিরে পাওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে বৃহস্পতিবার বালুরঘাটের জনসভা বিপ্লববাবুর কাছে ছিল রীতিমতো অগ্নিপরীক্ষা। কেন্দ্রের নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের ডাক দিয়ে এ দিন আদতে নিজের সাংগঠনিক শক্তি ঝালিয়ে নিলেন তিনি। সমাবেশে উপস্থিত সর্বভারতীয় তৃণমূল সেবা সমিতির চেয়ারম্যান তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই বাবুন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিপ্লবদা সকলকে নিয়ে কাজ করতে চান। এ দিনের সমাবেশে জনজোয়ারের খবর দলনেত্রী পাবেন।’’ কলকাতায় ফিরে তিনিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেলা তৃণমূলের ঐক্যবদ্ধতার কথা তুলে ধরবেন বলে ঘোষণা করেন তিনি।
বালুরঘাট শহরের থানা মোড়ে অনুষ্ঠিত এই সভায় প্রাক্তন বিধায়ক সত্যেন রায়, মাহমুদা বেগম, বালুরঘাট পুরসভার কাউন্সিলার সমেত সমস্ত পঞ্চায়েত ও জেলাপরিষদের প্রতিনিধি এবং শাখা সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এ দিন বিকেলে সভার সূচনা করে বিপ্লববাবু দলের প্রাক্তণ জেলা সভাপতি শঙ্কর চক্রবর্তীকে বালুরঘাটের নেতা বলে সম্বোধন করে মাইক্রোফোন তাঁর হাতে তুলে দেন। শঙ্করবাবু বক্তৃতা দিতে গিয়ে বিহ্বল হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, ‘‘বালুরঘাটের এই জায়গায় ১৯৯৪ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন যুব কংগ্রেস সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কুমারগঞ্জের শিক্ষক খুনের প্রতিবাদে ধৃত ছাত্র-অভিভাবকদের আদালত থেকে জামিনে ছাড়িয়ে সভা করেছিলেন।’’ ঐতিহাসিক ওই সভার সঙ্গে এ দিনের সমাবেশের গুরুত্ব উল্লেখ করেন তিনি। সভার শেষে বিপ্লববাবু এটাও স্বীকার করেন, তাঁদের ভুল বোঝাবুঝির সুযোগ নিয়ে বিরোধীরা গত বিধানসভা ভোটে জেলার ৬টির মধ্যে ৪টি আসন জিতে নিয়েছে। তাঁর দাবি, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটে ঐক্যবদ্ধ জেলা তৃণমূলের কাছে বিরোধীরা পরাস্ত হবে।’’
এ দিনই আবার ছিল বিপ্লববাবুর জন্মদিন। অবরুদ্ধ শহরে মানুষের ভোগান্তি কমাতে বিকেল ৫টার মধ্যেই সভা শেষ করেন তিনি। এরপরেই জেলা নেতৃত্বকে সঙ্গে নিয়ে জন্মদিনের কেক কেটে শেষ হাসি হাসলেন বিপ্লববাবু।