ফাইল চিত্র।
বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর নিজের অনুগামীদের পাশে রাখতে নতুন করে সক্রিয় হলেন বিনয় তামাং। গত দু’দিন ধরে তিনি ঘুরছেন পাহাড় থেকে ডুয়ার্সে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ছিলেন ডুয়ার্সের মেটেলিতে। শুক্রবার সকালে চলে আসেন দার্জিলিঙের বিজনবাড়িতে। দুই জায়গাতেই অনুগামীদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিনয়। দার্জিলিং, কালিম্পংয়েরও বিভিন্ন এলাকায় যোগাযোগ শুরু করেছেন তিনি।
গুরুং শিবির থেকে আলাদা হওয়ার পর বিনয়, অনীত থাপা নতুন করে সংগঠন তৈরি করেন। গুরুংয়ের ছায়া থেকে বহু নেতানেত্রী বার হয়ে তাঁদের পাশে আসেন। এঁদের সংখ্যাগরিষ্ঠই এখন অনীতের পাশে। নতুন পরিস্থিতিতে তিনি গুরুংয়ের সঙ্গে পাকাপাকি ভাবে হাত মেলাবেন, নাকি একলা চলবেন, তাই নিয়ে মতামত নিচ্ছেন বিনয়। বিনয়ের ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে খবর, জুলাইয়ে ইস্তফা দেওয়ার পরে সপ্তাহ দুয়েক বাড়িতে বসে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিনয় বোঝার চেষ্টা করেছেন, কে কে তাঁর সঙ্গে আছেন। সেই হিসেব করেই গুরুংয়ের সঙ্গে পাট্টাবং গেস্ট হাউসে দেখা করতে যান বিনয়।
বিনয় নিজে শুধু বলেছেন, ‘‘আমি রাজনীতির ময়দান ছাড়ছি না। তৃতীয় ইনিংস গোর্খা জাতির আরও কাজ, উন্নয়নের জন্য থাকবে। আমি এখনই সব বলছি না। যখন বলব, সবাইকে ডেকেই ঘোষণা করব।’’
দলীয় সূত্রের খবর, বিনয়ের অনুগামীদের একাংশ মনে করছেন, গুরুংয়ের সঙ্গে হাত মেলানো ছাড়া উপায় নেই। কারণ, ইস্তফা দেওয়ার পরে বিনয়ের লোকবল কিছুটা কম। তাই একা কিছু করার চেষ্টা বড় দাগ কাটতে পারবে না। রাজ্যের শাসকদলের প্রতি বিনয় ঝুঁকলেও কলকাতা থেকে সবুজ সঙ্কেত মেলেনি। আর জিএনএলএফ বা গোর্খা লিগের মতো দলে তাঁর ফেরাটা সম্ভব নয়। সেখানে স্বাভাবিক রাস্তা গুরুংয়ের পাতলেবাসের দিকেই যাচ্ছে, বলছেন ঘনিষ্ঠরা।
গুরুংয়ের দলে কিন্তু বিনয়-বিরোধীরাও রয়েছেন। তাঁরা গুরুংকে জানিয়েছেন, ২০১৭ সালে গোলমাল শুরু হওয়ার পরে বিনয়ই অনীতদের বুঝিয়ে দল ভাঙেন। এখন বিপাকে পড়ে মূলস্রোতে ফিরতে চাইছেন। তাঁকে নেওয়া হলে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়ার প্রশ্নও আসবে। তা নিয়ে দলে ক্ষোভ বাড়তে পারে।
যদিও সবটাই নির্ভর করছে গুরুংয়ের উপরে। পাহাড়ের নেতারা মনে করছেন, গুরুং-বিনয় বৈঠকে দল ভাঙানোর কথা হয়ে থাকতে পারে। অনীতের দিক থেকে বড় সংখ্যক লোককে ফের গুরুং শিবিরে সামিল করা যায় কি না, সেটাই হয়তো খতিয়ে দেখছেন বিনয়।