Binay Tamang

Binay Tamang: একক সিদ্ধান্তেই কোণঠাসা বিনয়

দলীয় সূত্রের খবর, গত দু’মাসে বিনয় দলে একা সিদ্ধান্ত নেওয়া শুরু করে দেন।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২১ ০৫:৪৪
Share:

২০১৭, সেপ্টেম্বর: মমতার সঙ্গে। ফাইল চিত্র।

স্কুলে পড়ার সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মোরাজি দেশাইকে জুতো দেখিয়ে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন বিনয় তামাং। নেপালি ভাষার মান্যতার দাবিতে আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী হিসেবে টানা দু’দিন ম্যাল চৌরাস্তায় অনশনে বসেছিলেন। শৈলশহর লাগোয়া ডালির বাসিন্দা এই ছেলেটির মধ্যে সম্ভাবনা দেখেন জিএনএলএফ প্রধান সুবাস ঘিসিং। তাই স্কুল-কলেজের পাট চুকিয়ে ঢুকে পড়েন রাজনীতিতে। বৃহস্পতিবার দুপুরে বাড়িতে বসে মোর্চা থেকে পদত্যাগ করার সময় সেই সুবাস ঘিসিং-কেই গুরু হিসেবে শ্রদ্ধা জানালেন বিনয়। দ্বিতীয় গুরু হিসেবে প্রয়াত গোর্খা লিগ নেতা মদন তামাংয়ের নাম নিলেন। সেই মদন তামাং, যাঁর খুনে অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন বিমল গুরুং।

Advertisement

ধরে নেওয়া হচ্ছে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বিনয় নতুন করে রাজনীতি শুরু করবেন। অনেকে বলছেন, বিনয়কে ডেকেছিলেন ঘিসিং। মদন তামাং-ও ডেকেছিলেন। বিমল গুরুং দল গড়ার সময় বিনয়কে সঙ্গে নেন। আবার গুরুং বিরোধিতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিনয়কেই সামনে রেখেছিলেন। ৩৩ বছর ধরে পাহাড়ের রাজনীতিতে বিনয় আছেন। কারণ, তিনি একদিকে যেমন বুদ্ধিজীবীদের কাছে গ্রহণযোগ্য, তেমনই নিচুতলার সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগ খুব ভাল।

মোর্চা নেতারা মনে করছেন, গত চার বছর বিনয় জীবনের সেরা সময়। একটি দলের মাথা থেকে জিটিএ প্রধান— কী তিনি হননি! কিন্তু ঘরেবাইরে শত্রুও তৈরি করে ফেলেন। বিশেষ করে পাহাড়ের তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক একেবারে ভাল নয়। তিনি শাসকদলে যোগ দিতে পারেন— এ কথা শোনার পর থেকেই ঘাসফুল শিবিরে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। এদিন গুরুংকে মোর্চার কান্ডারি বললেও ভোটের আগে শাসকদলের অনুরোধেও হাত মেলাননি বিনয়। কলকাতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পরে ‘গুরুং ক্লোজড চ্যাপ্টার’ বলে জানিয়ে দেন। তৃণমূল নেতৃত্ব মনে করছেন, একা লড়াই করে অন্যতম শক্তি হলেও বিনয় সবাইকে নিয়ে চলতে পারছেন না।

Advertisement

দলীয় সূত্রের খবর, গত দু’মাসে বিনয় দলে একা সিদ্ধান্ত নেওয়া শুরু করে দেন। যা অনীত থাপা, সতীশ পোখরেল, অমর সিংহ রাইদের মতো নেতাদের পছন্দ হচ্ছিল না। অনীত চুপচাপ থাকলেও তাঁর উপর চাপ বাড়ছিল। নিজের মতো কমিটি গঠন, নেতৃত্ব বাছাই করতেই পাল্টা প্রশ্নের মুখে পড়েন বিনয়। দলের নেতারা দূরে সরে যেতে থাকেন। জোটসঙ্গী তৃণমূলের সমর্থনও পাচ্ছিলেন না। আগামী পুরসভা, পঞ্চায়েত বা জিটিএ ভোটে বিধানসভার মতো ফলও কেউ চাইছেন না। এই অবস্থায় বিনয়ের সরে আসা ছাড়া রাস্তা খোলা ছিল না বলেই মোর্চার একাংশের ধারণা।

তৃণমূল বিনয়কে নিয়ে এখনই কোনও মন্তব্য করছে না। দলের নেতা গৌতম দেব পুরোটাই মোর্চার অন্দরের বিষয় বলে জানিয়েছেন। আর সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘‘পাহাড়ের রাজনীতির খেলা চলছে। আমরা জিটিএ নির্বাচন চাই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement