ঝুঁকি: দোলের দিনে ঝুঁকি নিয়ে স্কুটিতে সওয়ার তিন তরুণী। কারও মাথাতেই হেলমেট নেই। ছবি: নারায়ণ দে
সোমবারের দুপুর ১২টা। বর্ধমান রোডের ঝঙ্কার মোড়। ওভারব্রিজ থেকে ছুটে আসছে একের পর এক বাইক। আরোহীরা লাল, সুবজ, নীল গেরুয়া রঙে রাঙানো। অনেকের মাথায় রঙবেরঙের নকল চুল। কারওবা মুখে মুখোশ। কয়েকজনের হেলমেট নেই, তেমনই একই বাইক-স্কুটিতে ৩ জনও রয়েছেন। মোড়ের লোহার ব্যারিকেডে এসেই পুলিশ অফিসারদের সামনে দাঁড়িয়ে পড়ল বাইকগুলি। প্রথম অ্যালকোহল মাপার মিটারে মুখের সামনে ঠেকিয়ে পরীক্ষা তার পরে নথিপত্র। শেষে হেলমেট না পড়া বা বেশি আরোহী নিয়ে না চালানোর পরামর্শ দিলেন পুলিশ অফিসারেরা।
একই দৃশ্য ছিল মহানন্দা সেতু লাগোয়া মোড়, দার্জিলিং মোড়, হাসমিচক, সিটি সেন্টার, বিহারের মোড়ের মতো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায়। খোদ সিপি, ডিসি থেকে শুরু এসিপি, আইসি-ওসিরা রাস্তা নেমে শহরকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা চালিয়ে গেলেন। রবিবার, সোমবার রঙের দুই দিন গোটা কমিশনারেট জুড়ে পুলিশি অভিয়ানে গ্রেফতার হলেন ৩০৫ জন। উদ্ধার হল ৫৫২ লিটার মদ। ট্রাফিক পুলিশ মামলা করল ১৭০টি। এর মধ্যে মদ খেয়ে গাড়ি চালিয়ে ধরা পড়লেন ৩৯ জন। অতিরিক্ত জোরে গাড়ি চালিয়ে ধরা পড়লেন ২৪ জন। বিপজ্জনক ভাবে গাড়ি চালানোর জন্য ধরা হল ২৩ জনকে। রাতে সংখ্যা আরও বাড়বে বলে পুলিশ অফিসারেরাই জানিয়েছেন। এ ছাড়াও বাইক, গাড়ি-সহ দুর্ঘটনায় আহত হয়ে গোটা উত্তরবঙ্গ থেকে ৪০ জন মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়েছে। তাঁদের মধ্যে শিলিগুড়ির ১০ জন। এর মধ্যে মাটিগাড়ার বাইক দুর্ঘটনায় আহত নিউ রঙ্গিয়ার বাসিন্দা দীপেন বর্মন মারা (২৮) গিয়েছেন।
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা বলেন, ‘‘বাসিন্দারা আনন্দে মাতুক এটাই আমরা চাই। কিন্তু নিয়মভাঙা, মদ খেয়ে বেপরোয়া গাড়ি চালানো বা গোলমাল করাটা তো বরদাস্ত করা যাবে না।’’ সিপি জানান, বহু বাসিন্দা, গাড়ি, বাইককে আমরা দাঁড় করিয়ে সতর্ক করে ছেড়েছি। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়াটা জরুরি ছিল। নেশা করে গাড়ি চালানোর ঘটনা তো সবচেয়ে বেশি মিলেছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, ফুলবাড়িতে মদ খেয়ে দুইবন্ধুর মারামারি এবং একজনেক মৃত্যু ছাড়া তেমন বড় ঘটনা ঘটেনি। রবিবার সকাল থেকে কখনও বাইক বাহিনী নিয়ে, কখনও হেঁটে আবার গাড়িতে পুলিশ অফিসারেরা এলাকা ধরে ধরে ঘোরা শুরু করেন। কিন্তু নজরদারিতে ফাঁকফোকরও ছিল বলে অভিযোগ।