পেট্রোল পাম্পে ঢুকে তেলের ট্যাঙ্ক খুলে পাম্পের কর্মীর দিকে ১০০ টাকা এগিয়ে দিলেন মোটরবাইক আরোহী যুবক। পাম্পের কর্মী তাঁর মোটরবাইকে তেল ভরতেই পাশে এসে দাঁড়ালেন আরও এক যুবক। দু’জনের কারও মাথাতেই হেলমেট নেই। দ্বিতীয় জনের হেলমেট থাকলেও তা মোটরবাইকের পিছনে ঝোলানো।
কিন্তু কিছুদিন আগেও মালদহের চাঁচলে ৮১ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে ওই পেট্রোল পাম্পের ছবিটা অন্য রকম ছিল। পাম্পের একপাশে ফেস্টুনে জ্বলজ্বল করতে দেখা গিয়েছিল ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ লেখা বোর্ড। হেলমেট ছাড়া পেট্রোল দিতে আপত্তি করছিলেন পাম্প কর্মীরা। কয়েক মাস পরেই অন্য ছবি।
এখন কোথায় কী! হেলমেট পরা নিয়ে মোটরবাইক আরোহীদের একাংশের অনীহার সেই পুরনো ছবিটাই ধরা পড়েছে পেট্রোল পাম্পে। সঙ্গে পাম্পের কর্মীদেরও হেলমেট ছাড়া তেল না দেওয়ার সেই মনোভাবও উধাও হয়ে গিয়েছে। হেলমেট পরা নিয়ে পুলিশের ঢিলেঢালা মনোভাবের জন্যই ফের সেই পুরনো ছবিটা ফিরে এসেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। চাঁচলের এসডিপিও অভিষেক মজুমদার বলেন, ‘‘নোট বাতিলের পর পুলিশের একটা বড় অংশকে ব্যাঙ্কে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। তারপরেও নজরদারি চলছে। তার ফাঁক গলেই হেলমেট ছাড়া তেল দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি দেখছি।’’
নজরদারি এড়ানো ছাড়া কি নিজের নিরাপত্তার জন্য হেলমেট পরেন? চাঁচলের এনায়েতনগরের যুবক সরিফুল ইসলামের জবাব, ‘‘তাড়াহুড়োয় বাড়ি থেকে হেলমেট নিয়ে আসতে ভুলে গিয়েছি।’’ আর বাইকের পিছনে হেলমেট ঝুলিয়ে রাখা যুবক তো বলেই ফেললেন, ‘‘হেলমেট পরতে ভালো লাগে না। আগে হেলমেট ছাড়া তেল দিত না বলে পরতাম। এখন তো দিচ্ছে। তাই আর পরছি না।’’ পেট্রোল পাম্পের এক কর্মীর অবশ্য সাফ দাবি, অনেক বললেও বললেও কেউ শুনতে চান না। তাঁর কথায়, ‘‘হেলমেট না পরার জন্য তেল না দিলে উল্টে আমাদের হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে। আমরাই বা কী করব!’’
আর এই পরিস্থিতিতেই দু’মাসেই কার্যত উধাও সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ কর্মসূচি। শুধু পেট্রোল পাম্পেই নয়, ট্রাফিক পুলিশের সামনে দিয়েই ছুটছেন হেলমেটহীন বাইক আরোহী।