দার্জিলিঙয়ের চকবাজারে গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার জনসভা। ছবিঃ নিজস্ব চিত্র।
শুধুমাত্র বিরোধিতা না করে চা শ্রমিকদের জমির পাট্টা নিয়ে বিরোধীদের আলোচনায় বসার আহ্বান জানালেন প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি তথা জিটিএ প্রধান অনীত থাপা। আগাম ঘোষণা মতো রবিবার দুপুরে দার্জিলিং চকবাজারে প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার জনসভা ছিল। জমির অধিকারকে সামনে রেখে সভায় বিরোধীদের দিকে তোপ দাগলেও, ফের এক সঙ্গে কাজ করার কথাও বলেন অনীত। সকাল থেকে তুমুল বৃষ্টিতে শুরুতে ছাতা নিয়েই সভা শুরু হয়। পরে বৃষ্টি কমে। তবে পাহাড়ের রাস্তায় জনসভার জন্য কিছু যানজট হয়েছে। বৃষ্টি এবং রবিবার হওয়ায় গাড়ি কম থাকায় ভোগান্তি কিছুটা কম হয়েছে।
অনীত ছাড়াও সভায় দলের সচিব অমর লামা থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় কমিটির নেতানেত্রীরা ছিলেন। বৃষ্টি মাথায় পাহাড়ের বিভিন্ন বাগান, চা বস্তি থেকে গাড়ি লোক এসে সভায় যোগ দেন। অনীত সভায় জানান, সরকারের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক, সমন্বয় রাখায় স্বাধীনতার পর প্রথমবার চা শ্রমিকদের পাট্টা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানে যৌথ মঞ্চ, চা সুরক্ষা সমিতির প্রতিনিধিরা গঠনমূলক সমালোচনা না করে শুধু বিরোধিতা করছেন। জিটিএ প্রধান জানান, যৌথ মঞ্চের অন্যতম সক্রিয় শরিক সিপিএম। তাঁরা বহু বছর রাজ্যে ক্ষমতায় থেকেও জমির পাট্টা শ্রমিকদের দেয়নি। এখন উল্টো বাধা দিচ্ছে। এদের সঙ্গে অন্য দলও রয়েছে।
এর পরেই অনীত সভায় সবাইকে এক সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, ‘‘১ থেকে ১০ অক্টোবরের মধ্যে যৌথ মঞ্চ, চা সুরক্ষা সমিতি বৈঠক ডাকতে পারে। আমি তাতে যোগ দিতে পারি। আবার, আমিও বৈঠক ডাকতে পারি, সেখানে তারা আসতে পারে। সকলে মিলে পাট্টা নিয়ে সহমত হয়ে সরকারকে জানাব।’’ রাজ্যের সঙ্গে কথা বলে নির্দেশিকা নতুন করে বার করার দায়িত্ব তাঁর বলে প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি জানান।
যদিও এদিন রাত অবধি অনীতের আবেদনে সাড়া দেয়নি যৌথ মঞ্চ। মঞ্চের অন্যতম নেতা তথা প্রাক্তন সাংসদ সমন পাঠক বলেন, ‘‘আলোচনা করলে আমরা রাজ্যের সঙ্গে করব। জমি তো রাজ্য দেবে। কোনও দলের সঙ্গে বৈঠক করে কী হবে! আর আদতে শ্রমিকদের ৫ ডেসিমেল দিয়ে বাকিটা তো প্রোমোটিংয়ের পরিকল্পনা। এখানেই আমাদের বিরোধিতা।’’ দার্জিলিঙের বিজেপি বিধায়ক তথা জিএনএলএফ নেতা নীরজ জিম্বা বলেছেন, ‘‘জিটিএ-র একটা চাকরি দেওয়ার ক্ষমতা নেই। তাঁরা কী সিদ্ধান্ত নেবে?’’ অনীত সভায় বলেন, ‘‘আমরা সদর্থক রাজনীতি করি, নেতিবাচক নয়। এ দিন থেকেই বাগানে বাগানে নতুন করে প্রচার শুরু হয়ে যাচ্ছে।’’
উল্লেখ্য, বাগানে অব্যবহৃত বা ফাঁকা জমিতে ৫ ডেসিমেল নয়, যে শ্রমিক পরিবার যেখানে বছরের পর বছর রয়েছেন, তার পাট্টার দাবি তোলা হয়েছে। সঙ্গে কৃষি জমির পাট্টাও চাওয়া হয়েছে।