তাপস পাল
ভক্তদের ভিড়ের চাপে পাঁচিল ভেঙে যাওয়া। বলা নেই কওয়া নেই সাতসকালে হঠাৎ এসে পড়া, দাদার এমন অনেক ‘কীর্তি’র স্মৃতি আছে জলপাইগুড়ির শিল্পসমিতি পাড়ার দাসবাড়িতে।
আশির দশক। খোলা জানালা দিয়ে শুধু মুখ দেখা যাচ্ছিল অভিনেতার। বাইরে চেঁচামেচি শুর হয়ে যায় ‘আরে, দাদার কীর্তির কেদার চাট্টুজ্জে তো!’ ভিড় জমতে শুরু করে জলপাইগুড়ির শিল্পসমিতি পাড়ার দাসবাড়ির সামনে। তখন ‘দাদার কীর্তি’ মুক্তি পাওয়ার পরে বেশ কয়েক বছর কেটেছে। ‘সাহেব’ মুক্তি পেয়েছে। তাপস পাল তখন জনপ্রিয় নাম। দাস বাড়ির বউ তাপস পালের দিদি আল্পনা। দিদিকেই দেখতে এসেছিলেন তাপস। নায়ক এসেছেন খবর রটে যেতেই ভিড় বাড়তে থাকে।
ভক্তরা সকলেই ঘরে ঢুকতে চায়, একবার দেখতে চায় নায়ককে। বাইরে থেকেই কেউ চিৎকার করছেন ‘কেদার দা,’ কেউ ডাকছেন, ‘সাহেব।’ কেউ চেঁচিয়ে আবদার করছেন, ‘চরণও ধরিতে একলাইন হোক।’ ভিড় উঠে পড়েছে বাড়ির সামনের সীমানা পাঁচিলে। সাদামাটা সাবেকি বাড়ি। চাপ সইতে না পেরে হঠাৎ হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ল পাঁচিল। ভক্তের দল কেউ ছিটকে রাস্তায়, কেউ বা নর্দমায়। দাস পরিবারের সদস্য রাজদীপ দাসের কথায়, “ভাগ্যিস বড়সড় কোনও অঘটন ঘটেনি।”
রাজদীপের কাকা নরেন্দ্রনাথ দাস বিয়ে করেছিলেন তাপস পালের দিদিকে। ১৯৮২-তে বিয়ে হয়েছিল। ততদিনে ‘দাদার কীর্তি’ মুক্তি পেয়েছে। দিদির বিয়ের সম্বন্ধ নিয়ে তাপস এসেছিলেন এই বাড়িতে। বিয়ের পরে তাপসের দিদি এবং জামাইবাবু প্রায় ৬ বছর জলপাইগুড়ির বাড়িতে ছিলেন। তারপর দু’জনে কলকাতায় চলে যান। এই ছয় বছরে বেশ কয়েকবার জলপাইগুড়ির শিল্পসমিতি পাড়ার
ওই বাড়িতে এসেছিলেন তাপস।
মঙ্গলবার সকালে তাপস পালের মৃত্যুর খবর শুনে মনখারাপ রাজদীপের। সন্ধ্যায় বাড়িতে বসে শোনালেন কিছু স্মৃতির টুকরো। একবার সাতসকালে অভিনেত্রী শতাব্দী রায়কে নিয়ে হাজির হয়েছিলেন তাপস পাল। কাছে কোথাও শ্যুটিং চলছিল। আরও বললেন, “খাওয়াদাওয়া নিয়ে কোনও বায়নাক্কা ছিল না। এত জনপ্রিয় ছিল কিন্তু কোনও গুমোড় ছিল না।’’