জখম: আহত সিপিএম প্রার্থী। নিজস্ব চিত্র
বিডিও অফিসের বদলে মহকুমাশাসকের অফিসে মনোনয়ন দিতে গিয়েও রক্ষা পেলেন না বিরোধী প্রার্থীরা। ফের লাঠির ঘায়ে মাথা ফাটলো সিপিএমের এক প্রার্থীর। অভিযোগের তির শাসক দলের দিকেই। পুলিশ অবশ্য অভিযোগ মানতে চায়নি। গঙ্গারামপুরের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক বিপুল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বুনিয়াদপুরে মনোনয়ন নিয়ে গোলমালের খবর নেই। এ দিন শান্তিপূর্ণভাবে সব দলের প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।’’
শনিবার দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরে কোর্টমোড় এলাকায় ওই ঘটনায় প্রার্থীর প্রস্তাবক, তাঁর দাদাও হামলায় জখম হন। প্রকাশ্য রাস্তার উপর ওই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে সরব হন বাম নেতারা। গুরুতর জখম প্রার্থী মোজাম্মেল হককে গঙ্গারামপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর দাদা গজিমুদ্দিন আহমেদকেও হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করাতে হয়। জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী বলেন, ‘‘এ দিন থেকে বিডিও অফিসের বদলে এসডিও অফিসে মনোনয়ন জমা দেওয়ার ব্যবস্থা চালু হয়েছে। প্রার্থীদের নিরাপত্তা দিতে পুলিশি ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে। তারপরেও হামলার অভিযোগ হলে খতিয়ে দেখা হবে।’’
২৪ ঘণ্টা আগেই গঙ্গারামপুরের বিডিও অফিসে মনোনয়ন জমাকে কেন্দ্র করে রক্ত ঝরেছিল। বিরোধীদের অভিযোগ, শাসক দলের দুষ্কৃতীদের হামলায় সিপিএমের চার জন ও বিজেপির তিন জন আক্রান্ত হন। এর জেরেই বিডিও অফিসের বদলে এসডিও অফিসে মনোনয়ন জমার ব্যবস্থা করতে প্রশাসনকে নির্দেশ দেয় কমিশন। এ দিন গঙ্গারামপুর থেকে বুনিয়াদপুরে মহকুমাশাসকের অফিসে টোটো, অটোতে রওনা হন প্রার্থীরা। বুনিয়াদপুরে তিনমাথা মোড় থেকে কোর্টমোড় পর্যন্ত সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়ে পুলিশকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। তবুও তার সামনেই বিরোধী প্রার্থীদের আক্রান্ত হতে হয় বলে অভিযোগ।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক নারায়ণ বিশ্বাসের অভিযোগ, এ দিন পুলিশের সামনেই শাসক দলের আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এসডিও অফিসের আগে রাস্তা ব্যারিকেড করে রেখে তাঁদের কর্মীদের টোটো থেকে নামিয়ে হামলা চালিয়েছে। তাঁর ক্ষোভ, ‘‘মনোনয়ন দাখিলের প্রথম দিন থেকে গঙ্গারামপুরের বিডিও অফিস তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনীর দখলে চলে যায়। বিরোধী কোনও প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিতে গেলে তাদের উপর সশস্ত্র হামলা চালিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ নীরব। গঙ্গারামপুরের মহকুমা শাসকের অফিসেও একই পরিস্থিতি।’’
তৃণমূলের জেলা নেতা তথা বুনিয়াদপুরের পুরপ্রধান অখিল বর্মন অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘এ দিন দলের প্রায় সমস্ত কর্মী ও নেতা গঙ্গারামপুরে দলের জেলা সভাপতি বিপ্লববাবুর মাতৃবিয়োগের অন্ত্যেষ্টিতে উপস্থিত ছিলেন। কোনও হামলার অভিযোগ ঠিক নয়।’’