একপেশে: মোজমপুরে শুধুই তৃণমূলের প্রচার। নিজস্ব চিত্র
পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃণমূল জয় পেয়েছে। কিন্তু জেলা পরিষদের আসনে সেখানে ভোট হচ্ছে। চার প্রার্থীও দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু এলাকায় তৃণমূলের পতাকা-ব্যানারের ছড়াছড়ি ছাড়া বাকি তিন দলের প্রচারের কোনও চিহ্নই নেই। এই চিত্র কালিয়াচকের মোজমপুর ও নওদা যদুপুর পঞ্চায়েত এলাকার।
কেন এমন একপেশে ছবি এই পঞ্চায়েতে? কংগ্রেস, বিজেপি কর্মীদের অভিযোগ, মনোনয়ন দাখিলের আগে থেকেই ওই দুই পঞ্চায়েতে চাপা সন্ত্রাসরাজ কায়েম করেছে তৃণমূল। ফলে পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিতে যেমন প্রার্থী দেওয়া যায়নি, তেমনই প্রচারও করা যাচ্ছে না। তৃণমূল অবশ্য বিরোধীদের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পুলিশ-প্রশাসন জানাচ্ছে, এমন কোনও অভিযোগ কোনও দলই করেনি।
গত ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটের মতো এ বারও মোজমপুর ও নওদা যদুপুরের সমস্ত পঞ্চায়েত আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল। ৬টি পঞ্চায়েত সমিতি আসনেও একই ফল। তবে এ বারও জেলা পরিষদের ৩৪ নম্বর আসনে সেখানে চার জন প্রার্থী দাঁড়িয়েছেন। তাঁরা হলেন তৃণমূলের নিলুফার ইয়াসমিন বিশ্বাস, কংগ্রেসের শবনম সুলতানা, বিজেপির পিঙ্কি ঘোষ ও নির্দল পলিনা বিবি। স্বাভাবিক ভাবেই চার প্রার্থীরই এলাকায় প্রচার করার কথা। কিন্তু জেলা পরিষদের ওই আসনের অন্তর্গত আলিপুর ১ ও ২ এবং জালুয়াবাধাল পঞ্চায়েত এলাকায় চার দলের প্রার্থীর সমর্থনে ফ্লেক্স, ব্যানার থাকলেও মোজমপুর ও নওদা যদুপুর পঞ্চায়েতে প্রচারের সেই ছবি উধাও। গিয়ে দেখা গেল, মোজমপুর স্ট্যান্ড থেকে হারুচক, কিসমতপুর হয়ে নারায়ণপুরের রাস্তার দু’পাশে শুধুই তৃণমূলেরই পতাকা ঝুলছে, নিলুফারের সমর্থনে রয়েছে ফ্লেক্সও।
হারুচক গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রবীণ বললেন, “জমানা বদলের পর এখানে এখন শেষ কথা বলছে তৃণমূল। অন্য দলের প্রচার হবে কেন?” একই ছবি নওদা যদুপুর পঞ্চায়েতের হাসপাতাল মোড়, কাছারিপাড়া, সালেপুর, সুকদেবপুর, ভাগলপুর, দাঁড়িয়াপুর থেকে অনুপনগরের রাস্তায় রাস্তায়। হাসপাতাল মোড়ে দাঁড়িয়ে রফিকুল শেখ (নাম পরিবর্তিত) বললেন, “আমরা শান্তি চাই। প্রতিবাদ করলে জান চলে যাবে।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন অবশ্য বলেন, ‘‘বিরোধীদের পায়ের তলায় মাটি নেই, তাই ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন।’’