চিন্তা সব শিবিরেই

সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ কর্তারা জানান পর্যাপ্ত সশস্ত্র পুলিশ না থাকায় প্রতিটি বুথে নিরাপত্তা যথাযথ দেওয়া মুশকিল। এক পুলিশ কর্তার কথায় অনেক বুথে দুই জন পুলিশকর্মীর মধ্যে এ জন আবার মহিলা।

Advertisement

সৌমিত্র কুণ্ডু

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৮ ০২:২১
Share:

গন্তব্য: মালদহে পঞ্চায়েত ভোটে বুথ এর পথে ভোট কর্মীরা। ছবি: তথাগত সেন শর্মা

কংগ্রেসের চিন্তা, মালদহ, উত্তর দিনাজপুরে পুরনো গৌরব ধরে রাখা। তৃণমূলের চিন্তা, কংগ্রেসের সেই গৌরব এ বার তাদের বরণ করে নেবে কি না! বামেরা অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে উদ্যোগী।

Advertisement

সেই সঙ্গে চিন্তা নিরাপত্তা নিয়েও। তার কারণ, সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ কর্তারা জানান পর্যাপ্ত সশস্ত্র পুলিশ না থাকায় প্রতিটি বুথে নিরাপত্তা যথাযথ দেওয়া মুশকিল। এক পুলিশ কর্তার কথায় অনেক বুথে দুই জন পুলিশকর্মীর মধ্যে এ জন আবার মহিলা। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সিভিক পুলিশই ভরসা। সশস্ত্র পুলিশ বুথে দিলে অন্তত ২ জন করে দেওয়ারই চল। কিন্তু সেই সংখ্যায় পুলিশ কর্মী কোথায়। পুলিশ কর্তাদের অনেকেই সেই সমস্যা মেনে নিচ্ছেন। তার উপর মালদহ, ইসলামপুরের মতো বিভিন্ন জায়গা থেকে পিস্তল, গুলি, বোমা উদ্ধার হচ্ছে। মনোনয়নপর্ব থেকেই শাসক এবং বিরোধী দলের গোলমালে মালদহ এবং দুই দিনাজপুর উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। কোথাও প্রকাশ্যে পিস্তল উঁচিয়ে ঘুরে বেড়ানোর অভিযোগ শাসক দলের বিরুদ্ধে। কোথাও বোমাবাজি, তির-ধনুক নিয়ে মিছিলের অভিযোগ, তৃণমূল, বিজেপির বিরুদ্ধে। আক্রান্ত হয়েছেন পুলিশ কর্মীরাও। যদিও উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ, দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বা মালদহের পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ সকলেই নিজেদের জেলাগুলোতে ভোটের দিন যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা বুথগুলোতে থাকবে বলে দাবি করেছেন।

বস্তুত, পঞ্চায়েত নির্বাচনকে ঘিরে উত্তপ্ত, দুই দিনাজপুর এবং মালদহ-ও। মালদহে চাঁচল মহকুমায় বিরোধী এবং শাসক দলের একাধিক কর্মী-সমর্থক খুনের অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূলের উত্তর এবং দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাসভাপতি অমল অচার্য, বিপ্লব মিত্রদের কথায়, বিরোধীরা নিজেরাই গোলমাল পাকাচ্ছে।

Advertisement

কিন্তু সেই সঙ্গে তৃণমূল নেতারা চিন্তায় রয়েছেন নিজেদের ঘর নিয়েও। মালদহে তৃণমূলের দাপটে বড় সমস্যা ঘরের বিবাদ। ২০১৩ সালের নির্বাচনে জেলা পরিষদের ৩৮টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস এবং বাম ১৬ টি করে আসন পায়। বাকি তৃণমূল। বছর তিনেক পরেই কংগ্রেস নেত্রী তথা সভাধিপতি সরলা মূর্মূ-সহ বাম কংগ্রেসের ১৯ জন সদস্যকে দলে যোগদান করিয়ে তৃণমূল বোর্ড দখল করে। পঞ্চায়েত সমিতি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতগুলোও অধিকাংশ দখল করে নেয়। এই আবহে তৃণমূলকে ঠেকাতে গনিখানের মালদহে সিপিএমের সঙ্গে কংগ্রেসের সমঝোতাই বড় ভরসা। গত বিধানসভা নির্বাচনে সেই সমঝোতার কাছেই তৃণমূল পিছিয়ে পড়ে।

উত্তর দিনাজপুর জেলায় ১০ মাস আগে রায়গঞ্জ পুরসভা দখল নিয়েছে তৃণমূল। কংগ্রেসের জেলা সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘ভোটটা ঠিক মতো হবে কী না সেটাই তো সব চেয়ে বড় প্রশ্ন। পুলিশ তো তৃণমূলের হয়ে কাজ করছে। বিরোধীরা জোটবদ্ধ থেকে যতটা রক্ষা করতে পারি।’’

দক্ষিণ দিনাজপুরেও তৃণমূলের বড় সমস্যা নিজেরাই। তবে জেলা পরিষদ গতবারই দখল করেছিল তারা। এবারও ধরে রাখতে পারবেন বলেই ধারণা জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রর।

সহ প্রতিবেদন: জয়ন্ত সেন, অনুপ মোহান্ত

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement