আসন ১৯, শাসক দলের প্রার্থীর সংখ্যা ২৮। মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিকে এসে জলপাইগুড়িতে জিইয়ে রইল শাসক দলের গোষ্ঠী অস্বস্তি। জেলা পরিষদে ১৯টি আসনে তৃণমূলের প্রতীকের দাবিদার ২৮ জন প্রার্থী। এই আঠাশ জনই মনোনয়নপত্রে দলের নাম লিখেছেন তৃণমূল। এ ছাড়াও বহু বিক্ষুব্ধ নির্দল হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছেন বলে তৃণমূলের অন্দরে আলোচনা চলছে। সেই সংখ্যা ধরলে তৃণমূলের দ্বন্দ্ব চলছে জেলা পরিষদের ১২টি আসনেই।
দলের প্রার্থী হওয়া নিয়ে টানাপড়েন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে সোমবার মালবাজার মহকুমা শাসকের দফতরে বিদায়ী জেলা পরিষদ সদস্য তথা তৃণমূল নেত্রী কৃষ্ণা রায় মনোনয়ন দিতে গেলে তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে গোলমাল শুরু হয়। দু’তরফের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যেও ধস্তাধস্তি শুরু হয়।
শুক্রবার পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব শিলিগুড়ি থেকে জলপাইগুড়ি সদর মহকুমা শাসকের দফতরে এসে তাঁর ঘনিষ্ঠ দেবাশিস প্রামাণিককে রাজগঞ্জের জেলা পরিষদ আসন থেকে মনোনয়ন জমা করিয়েছিলেন। এ দিন সেই আসনেই মনোনয়ন দেন ডাবগ্রামের তৃণমূল নেতা বাদল দেব। রাজ্য কমিটির নির্দেশেই তিনি মনোনয়ন দিয়েছেন বলে দাবি। গৌতমবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘দল যেমন চাইবে তেমনটাই হবে।’’
জেলা পরিষদের আসন সংখ্যা থেকে প্রার্থী সংখ্যা বেশি রয়েছে বিজেপিরও। তবে গেরুয়া শিবিরের দাবি, তাঁদের অনেক প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল অথবা ভয় দেখিয়ে প্রত্যাহার করানোর আশঙ্কা রয়েছে। সে কারণেই বেশি সংখ্যক মনোনয়ন।
বামেরা জেলা পরিষদের ১৯টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। কংগ্রেস মোট ৯টি আসনে মনোনয়ন জমা করেছে। জেলা কংগ্রেস সভাপতি নির্মল ঘোষ দস্তিদার জানিয়েছেন, যে আসনগুলিতে দলের প্রার্থী নেই সেখানে সবুজ, গেরুয়া, লাল সকলের থেকেই সম দূরত্ব বজায় রাখা হবে। বাগরাকোট, রাঙামাটি এবং ডামডিম বিনা লড়াইয়ে ছিনিয়ে নেওয়া গিয়েছে বলে দাবি তৃণমূল জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তীর।
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হলেও দিনভর দ্বন্দ্ব সামলাতেই জেরবার হলেন তৃণমূল নেতারা।
এ দিন মালবাজারের ১৪ নম্বর আসনে মনোনয়ন জমা দিতে যান কৃষ্ণা রায়। তিনি যুব তৃণমূল সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। ওই আসনে আগেই মনোনয়ন দেন সৌরভ-ঘনিষ্ঠ দুলাল দেবনাথ। কৃষ্ণা মনোনয়ন দিতে গেলে তৃণমূল কর্মীরা তাঁকে বাধা দেয় বলে অভিযোগ। এর পরেই শুরু হয় হাতাহাতি।
১৪ নম্বরে মনোনয়ন দিতে না পেরে কৃষ্ণাদেবী ১৫ নম্বরে প্রার্থী হন। এ দিকে আগে থেকেই সেখানে দলের হয়ে আরেকজন মনোনয়ন জমা দিয়ে রেখেছেন। যুব সভাপতি সৈকতবাবুর কথায়, ‘‘কৃষ্ণা রায় ১৪ নম্বর থেকে গতবার জিতেছিলেন সেখানেই ওর প্রার্থী হওয়ার কথা। এটাই দলের নীতি। এ ক্ষেত্রে তা হল না।’’