রায়ের পরে সংযত সব দলই বার্তা দিল সম্প্রীতির

সবার মুখে শান্তির কথা

শুক্রবারের নমাজে ভিড় ভালই হয়। গতকালও প্রায় সাড়ে ৪০০ নমাজি উপস্থিত ছিলেন জলপাইগুড়ির চার নম্বর গুমটিতে কালুসাহেবের মসজিদে।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৯ ০৫:৪৬
Share:

নজর: মোবাইলে অযোধ্যা-রায় সংক্রান্ত খবর দেখা চলছে। জলপাইগুড়িেত একটি মসজিদে। ছবি: সন্দীপ পাল

তখনও জানা ছিল না, শনিবারই অযোধ্যা মামলার রায় দেবে সুপ্রিম কোর্ট। তবে কয়েকদিনের মধ্যেই যে রায়দান হবে, এটা জানতেন সকলে। শুক্রবার দুপুরে জুম্মার নমাজের পর মসজিদ থেকে উপস্থিত সবার কাছে অনুরোধ করা হয়, মামলার রায় যাই হোক না কেন, সম্প্রীতির পরিবেশ যেন অক্ষুণ্ণ থাকে।

Advertisement

শুক্রবারের নমাজে ভিড় ভালই হয়। গতকালও প্রায় সাড়ে ৪০০ নমাজি উপস্থিত ছিলেন জলপাইগুড়ির চার নম্বর গুমটিতে কালুসাহেবের মসজিদে। নমাজের পর প্রতি শুক্রবার ইমাম বা মসজিদের কর্মকর্তারা সমাজ, জীবন, ধর্ম নিয়ে কথা বলেন। গতকাল মসজিদের কর্মকর্তা তথা প্রাক্তন সম্পাদক পল হাসান প্রধান কথা বলেন বাবরি মসজিদ প্রসঙ্গে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আগের দিন বাবরি মসজিদ নিয়ে আলোচনায় উপস্থিত কয়েকশ মুসলিম সম্প্রদায়ের বাসিন্দাকে মসজিদের তরফ থেকে এলাকায় শান্তি রক্ষার আহ্বান জানানো হয়। বলা হয় কোথাও কোনও রকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হলে মসজিদে খবর পাঠানোর কথাও

পল হাসান প্রধানের কথায়, “তখনও জানতাম না যে, শনিবারই রায়দান হবে। বিষয়টি এই স্পর্শকাতর যে, ন্যূনতম প্ররোচনাতেই খারাপ কিছু ঘটে যেতে পারে। তাই প্রথম থেকেই সকলকে সচেতন ও সর্তক করার চেষ্টা করেছি। সারা বছর মুসলিম-হিন্দুরা আমরা এক সঙ্গে থাকি। সেই সম্প্রীতিই রক্ষা করতে বলেছি।”

Advertisement

এখানে কালীপুজোর কমিটি যে মসজিদ আলোকমালায় সাজিয়ে তোলে আর হুজুর সাহেবের মেলার সময় শিবমন্দির যে সেজে ওঠে মসজিদের উদ্যোগে, সে কথাও নমাজের পর স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়। মসজিদ কমিটির এক সদস্যের কথায়, “আমরা মসজিদ কমিটির অবস্থান জানিয়ে দিয়েছি। আইনি লড়াই নিয়ে মুসলিম বোর্ড ভাববে। কিন্তু আমরা যে সবার আগে শান্তিশৃঙ্খলা রাখার পক্ষে, সেই বার্তাই দেওয়া হয়েছে।”

সম্প্রীতির ভাবনায় যে বাসিন্দারা বিশ্বাসী এবং কোনও গোলমাল যে হবে না, সে বিষয়ে নিশ্চিন্ত ছিলেন মসজিদ কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন শহরে মসজিদের সামনে নিরাপত্তারক্ষী থাকলেও জলপাইগুড়িতে দেখা যায়নি। সূত্রের খবর, বেশ কয়েকটি মসজিদ কমিটির তরফে পুলিশকে জানানো হয়েছিল, নিরাপত্তার কোনও প্রয়োজন নেই। শনিবার দিনভর ছবিটা আর পাঁচটা দিনের মতোই ছিল কালুসাহেবের মসজিদ চত্বর, দিনবাজার, মার্চেন্ট রোডের মসজিদের সামনে। যদিও জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় রেখে দেওয়া হয়েছিল বাহিনী। সিভিক ভলান্টিয়ারদের একটি দলকে লাইন করানোও হয়। নিরাপত্তা বাড়ানো হয় জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া সীমান্ত এলাকায়। কাঁটাতারের বেড়া নেই জলপাইগুড়ির বেরুবাড়ির বিস্তীর্ণ এলাকায়। সেখানে নজরদারি বাড়ানো হয়েছিল। মোতায়েন ছিল সাদা পোশাকের পুলিশও।

প্রশাসন সূত্রের খবর, হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের উপর নজর রাখা হলেও শনিবার জলপাইগুড়িতে তাদের সক্রিয়তা দেখা যায়নি। বিজেপির এক জেলা নেতার কথায়, “রামমন্দির নিয়ে একটা শব্দও উচ্চারণ করতে বারণ করে দিয়েছে রাজ্য কমিটি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement