বাড়ি থেকে ডেকে এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল প্রতিবেশী তিন যুবকের বিরুদ্ধে। বাধা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন ওই ব্যবসায়ীর ভাইও। রবিবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের বৈষ্ণবনগর থানার মুন্সিটোলা গ্রামে।
এই ঘটনায় আক্রান্ত কয়লা ব্যবসায়ী পবন ঘোষ ও তাঁর ভাই ভীম গুরুতর জখম অবস্থায় ভর্তি রয়েছেন মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। সোমবার সকালে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তিন জনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল বৈষ্ণবনগর থানায়। কয়লা ব্যবসা নিয়ে রেষারেষির জেরে হামলা হয়েছে বলে দাবি পরিবারের। মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েছিল। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈষ্ণবনগর থানার লক্ষ্মীপুর গ্রামপঞ্চায়েতের মুন্সিটোলা গ্রামের বাসিন্দা পবন ঘোষ। তিনি পেশায় কয়লা ব্যবসায়ী। তাঁর বাবা অশোক ঘোষ দীর্ঘ দিন আগেই মারা গিয়েছেন। বাড়িতে বৃদ্ধা মা গীতাদেবী সহ চার ভাই মিলে থাকেন। ওই গ্রামেরই বাসিন্দা আরও কয়েকজন যুবকও কয়লার ব্যবসা করেন। এই ব্যবসা নিয়েই পবনের সঙ্গে তাদের রেষারেষি শুরু হয়ে যায়। এমনকী, গ্রামে একাধিকবার দুই দলের মধ্যে বচসা হয়েছে। এ দিন রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ প্রতিবেশী এক যুবক দলবল নিয়ে চড়াও হয় পবনের বাড়িতে। রাতে তাঁকে বাড়ি থেকে বের করে হাঁসুয়া দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে বলে অভিযোগ। চিৎকার শুনে ছুটে যায় পবনবাবুর ভাই ভীম ঘোষ। তিনি লক্ষ্মীপুর হাইস্কুলের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। পবনবাবুকে বাঁচাতে গেলে তাঁর উপরেও হাঁসুয়া দিয়ে হামলা চালানো হয়। এমনকী, তাঁদের বৃদ্ধা মা গীতাদেবীকেও মারধর করা হয়। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে। স্থানীয় বাসিন্দারা এলাকায় গেলে পালিয়ে যায় অভিযুক্তেরা। আহতদের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় বেদরাবাদ গ্রামীণ হাসাপাতালে।
তবে দুজনেরই আঘাত গুরুতর থাকায় রাতেই তাঁদের স্থানান্তরিত করা হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজে। পবনবাবুর শরীরে একাধিক হাঁসুয়ার কোপ রয়েছে। ভীমবাবুর মাথায় হাঁসুয়ার আঘাত রয়েছে। এই ঘটনায় এদিন সকালে থানাতে তিন প্রতিবেশীর নামে অভিযোগ করা হয়েছে। আহত পবনবাবু বলেন, ‘‘আমার ব্যবসা ভাল চলছে। যা তারা মেনে নিতে পারছিল না। এদিন মদ্যপ অবস্থায় আমাদের উপরে হামলা চালায়। আমাকে পরিকল্পিত ভাবে খুনের চেষ্টা করেছিল তারা। তবে কোনও রকমে রক্ষা পাই। আমরা থানাতে অভিযোগ করেছি।’’ পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তেরা ফেরার রয়েছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।