(বাঁ দিকে) মানিকচকের বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র। বিধায়কের গাড়ি (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
মালদহের মানিকচকের তৃণমূল বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রের উপর হামলার চেষ্টার অভিযোগ উঠল! বিধায়কের দাবি, অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন তিনি! শনিবার রাত ১০টা নাগাদ ধরমপুরের কাছে মালদহ-মানিকচক রাজ্য সড়কের উপরেই ঘটনাটি ঘটেছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত ১০টা নাগাদ ধরমপুরের কাছে রাজ্য সড়কের উপর উল্টো দিক থেকে আসা একটি গাড়ি সাবিত্রীর গাড়িতে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। বিধায়কের গাড়িচালকের তৎপরতায় কোনও মতে রক্ষা পান তিনি। এখানেই শেষ নয়! অভিযোগ, কিছু ক্ষণ পর সন্দেহজনক গাড়িটি ফের ঘুরে এসে পিছন থেকে সাবিত্রীর গাড়িকে ধাওয়া করতে শুরু করে। এই ঘটনায় ভয় পেয়ে যান বিধায়ক। শেষমেশ একটি জনবহুল এলাকায় নিজের গাড়িটি দাঁড় করিয়ে মানিকচক থানা এবং মিলকি পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দেন তিনি।
তবে ঘটনায় মধ্যরাত পর্যন্ত আতঙ্কের রেশ কাটেনি রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বিধায়ক সাবিত্রীর। রাতে তিনি আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘ইংরেজবাজার থানা এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। ওই গাড়িটিতে বেশ কয়েক জন ছিল। যে ভাবে প্রথম বার ধাক্কা মারার পরে আবারও গাড়িটি আমার গাড়িকে লক্ষ্য করে এগিয়ে আসছিল, তাতে আমি নিশ্চিত যে আমাকে হত্যা করার জন্যই এ ভাবে হামলা করা হয়েছে। তবে ওদের দ্বিতীয় বার দেখতে পেয়ে যে গাড়ি নিয়ে ওই এলাকায় থেকে সরে আসব, তা সম্ভবত আততায়ীরা বুঝতে পারেনি। তাই হয়তো প্রাণে বেঁচে গিয়েছি।”
সাবিত্রী আরও জানিয়েছেন, হামলাকারী গাড়িটির পিছনের দিকে খুব ধুলো লেগেছিল, যাতে কেউ গাড়িটিকে চিনতে না পারে। তাঁর অনুমান, গাড়িটি সম্ভবত মোথাবাড়ির দিকে চলে গিয়েছে। বিধায়কের অভিযোগের ভিত্তিতে দ্রুত তদন্ত শুরু হয়েছে। সন্দেহজনক গাড়িটির খোঁজে তল্লাশিও শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, সাবিত্রীর গাড়ির চালক একটু অসচেতন হলেই বড় বিপদ হয়ে যেত।
বিধায়কের গাড়িতে হামলার অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলা বিজেপির নেতা অম্লান ভাদুড়ী বলেন, "মালদহে এই রাজনীতিটা ছিল না। পুলিশের গোয়েন্দা দফতরের কাছে কি কোনও খবর থাকছে না?" পাশাপাশি, তিনি টেনে এনেছেন মালদহের কাউন্সিলর দুলাল সরকারের খুনের ঘটনাও। অম্লানের প্রশ্ন, "মালদহে পুলিশ করছেটা কী?"
বেশ কিছু দিন ধরেই নানা ঘটনার জেরে খবরের শিরোনামে রয়েছে মালদহ। গত ২ জানুয়ারি মালদহে প্রকাশ্যে গুলি চলে। তাতে মৃত্যু হয় জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি দুলালের। ১৪ জানুয়ারি কালিয়াচকে গুলি চলে। তাতে মৃত্যু হয় হাসা শেখ নামে এক তৃণমূল কর্মীর। ২৩ জানুয়ারি মাদক কারবারিদের ধরার সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। ২৩ জানুয়ারি ক্লাবে ভলিবল খেলার সূচনার সময় শূন্যে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে। সেই আবহেই ফের মালদহে প্রাক্তন মন্ত্রীর গাড়িতে হামলার ঘটনায় প্রশ্নের মুখে জেলার আইনশৃঙ্খলা।