পাশাপাশি: অশোক ও শঙ্কর
কংগ্রেসের দুই বিধায়ক শঙ্কর মালাকার ও সুনীল তিরকেকে পাশে বসিয়ে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতিবন্ধকতা তৈরির অভিযোগ আনলেন শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। ছিলেন শিলিগুড়ির প্রাক্তন মেয়র কংগ্রেসের গঙ্গোত্রী দত্ত। সোমবার দীনবন্ধু মঞ্চে শিলিগুড়ি পুরসভার তরফে ডাকা নাগরিক কনভেনশনে এই কথা বলেন মেয়র। এ দিনের অনুষ্ঠানে অবশ্য উপস্থিত ছিলেন না পুরসভার বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকার, কংগ্রেস ও বিজেপির কাউন্সিলররা। বিরোধী দলনেতার দাবি, তাঁকে আমন্ত্রণ জানান হয়নি।
রঞ্জনের কথায়, ‘‘এসজেডিএ দুর্নীতি কাণ্ড নিয়ে তদন্ত চলছে। শঙ্করবাবুও অভিযুক্ত। তাঁকে পাশে নিয়ে শিলিগুড়ির মেয়র অনৈতিক নাগরিক সভা করছেন। মেয়র দু’মুখো নীতি নিয়ে চলছেন। ওই অনৈতিক সভায় যেতাম না।’’
মেয়রের অভিযোগ, ‘‘অনেক প্রতিবন্ধকতা, বাধা রয়েছে। চার বছর ধরে অর্থনৈতিক অবরোধ করা হচ্ছে। তার মধ্যেই পরিষেবা এবং পরিকাঠামো তৈরির কাজ করতে হচ্ছে। রাজ্যের সহায়তা না-পেলে যে কোনও দেশেই পুরসভার একার পক্ষে তা করা শক্ত।’’ মেয়রের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীকেও সমস্যার কথা তিনি জানিয়েছেন। কলকাতায় ধর্নায় বসার পরে মাস দু’য়েক আগে কিছু ক্ষেত্রে বরাদ্দ মিলেছে। একই তিক্ত অভিজ্ঞতা প্রাক্তন মেয়রের আছে বলেও অশোকের দাবি।
এ দিন হেনস্থার কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন প্রাক্তন মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত। তিনি বলেন, ‘‘সংখ্যালঘু বোর্ড নিয়ে আমাকে পুরসভা চালাতে হয়েছিল। শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে দিয়ে পুরসভার সমান্তরাল পরিষেবা চালানো হত। মেয়রকে অপদার্থ বলা, মিথ্যে দোষারোপ করা, আধিকারিকদের নিজেদের মতো ডেকে নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হত। অনেক অপমান, গঞ্জনা সহ্য করতে হয়েছে।’’
রাজ্যের শাসক দলের সমালোচনা করেন কংগ্রেস বিধায়ক শঙ্কর মালাকারও। তিনি জানান, গত আট বছর বিধায়ক রয়েছেন কিন্তু শাসক দলের কোনও অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পাননি। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘বিরোধী দলের মেয়র, বিধায়ক, মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি বলে তাঁরা উন্নয়নের বরাদ্দ পাবেন না?’’ যদিও রঞ্জনের পাল্টা দাবি, গ্রিন সিটি, সবার জন্য বাড়ি প্রকল্পে পুরসভা টাকা পেলেও কাজ করছে না। মেয়র মুখে আর্থিক সমস্যার কথা বললেও কয়েক লক্ষ টাকা নাগরিকসভার বিজ্ঞাপন, হোর্ডিং, প্রচারে খরচ করছেন বলেও আক্রমণ করেন তিনি।
কংগ্রেসের পরিষদীয় নেতা সুজয় ঘটক জানান, পারিবারিক কারণে সভায় যেতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘‘মেয়র প্রয়োজনে সুবিধা চেয়ে নেন, কিন্তু পরে কংগ্রেস কাউন্সিলরদের সঙ্গে কোনও আলোচনা করেন না। কংগ্রেসের ওয়ার্ডে উন্নয়নের কাজে বরাদ্দ ঠিক মতো মেলে না।’’