ভোটের বাকি আর চার দিন। তার আগে গাড়িতে করে নগদ টাকা নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে চার ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল কালিম্পং পুলিশ। একই ভাবে নির্বাচনী বিধি চালু থাকা সত্ত্বেও সরকারি প্রকল্পে বাড়ি তৈরির চেক বিলি করতে গিয়ে ধরা পড়লেন আরও তিন জন। একই দিনে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের পদ ছাড়ার কথা জানিয়ে হরকা বাহাদুর ছেত্রী বুঝিয়ে দিলেন, তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব এখন কতটা।
সব মিলিয়ে বুধবার পাহাড় জমজমাট।
নির্বাচনী বিধি চালু হয়ে গেলে যেমন সরকারি প্রকল্পের চেক বিলি করা যায় না, তেমনই পঞ্চাশ হাজারের বেশি টাকা নিয়ে ঘুরলে প্রয়োজনীয় নথি সঙ্গে থাকা দরকার। পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন দুপুরে কালিম্পং বাজার এলাকায় খবরের ভিত্তিতে একটি ছোট গাড়ি আটকায় পুলিশ। গাড়ি ছিলেন কমল অগ্রবাল, প্রতীক শর্মা, তপন খাওয়াস ও কুরবান আলি। তাঁদের কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা উদ্ধার হয়। নথিপত্র না থাকায় চার জনকেই গ্রেফতার করা হয়।
এর পরে কালিম্পঙের ব্যবসায়ীদের একাংশ শহরের বাজার বন্ধ করে দেন। ডম্বর চকে গিয়ে ধৃতদের জামিনে মুক্তির দাবি জানান। এলাকায় উত্তেজনা ছড়ালে বিরাট পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়।
কালিম্পঙের পুলিশ সুপার অজিত সিংহ যাদব জানান, ধৃতদের টাকা বিলির উদ্দেশ্য ছিল। ধৃতদের যে ছাড়া হবে না, তা-ও জানিয়ে দেওয়া হয়। এই নিয়ে প্রশাসনের কঠোর মনোভাবে পরে নরম হন ব্যবসায়ীরা। রাতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে খবর যায়, বৃহস্পতিবার ধর্মঘট তুলে নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি গৌতম দেব বলেন, ‘‘টাকা দিয়ে ভোট কেনার চেষ্টা করছে মোর্চা। পুলিশকে কড়া ভাবে বিষয়গুলি দেখতে হবে।’’ মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, ‘‘ওঁরা কালিম্পঙের ব্যবসায়ী। বিধির বিষয়টি তাঁরা জানতেন না। অযথা তাঁদের গ্রেফতার করে মোর্চার নাম বদনাম করা হচ্ছে।’’
এ দিনই কার্শিয়াঙের মন্টিভিট চা বাগানে জনমুক্তি লেপচা অর্গানাইজেশনের তিন জন জিটিএ-র পক্ষ থেকে ‘হামরো ঘর’ প্রকল্পে ১৩টি পরিবারের হাতে ৫০ হাজার টাকা করে চেক বিলি করছিলেন। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করে। রোশন গিরি বলেন, ‘‘পুলিশ দিয়ে তৃণমূল আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করছে।’’
দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার অমিত জভালগি জানান, মোর্চার অনুগামীরা ভোটারদের প্রভাবিত করার জন্য এই কাজ করছেন বলে তদন্তে সামনে আসছে।
এ দিনই উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জন আন্দোলন পার্টির নেতা হরকা বাহাদুর। তিনি বলেন, ‘‘পর্ষদে আমার কোনও ভূমিকা নেই। অথচ তা নিয়ে তৃণমূল নানা প্রশ্ন তুলছে। এই পর্ষদের অধীনে এখন পর্যন্ত কী কাজ হয়েছে, তা-ও আমার জানা নেই।’’ আজ, বৃহস্পতিবার তিনি ইস্তফাপত্র রাজ্যপালের কাছে পাঠাবেন বলে জানিয়েছেন।