বিনা অনুমতিতে পথ সভা করে নির্বাচনী বিধি ভঙ্গের অভিযোগে জড়ালো তৃণমূল। বুধবার রাতে দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি এলাকার ঘটনা। দলের প্রার্থী শঙ্কর চক্রবর্তীর পক্ষে ওই ভোট প্রচার সভায় বক্তৃতা দেন তৃণমূল সাংসদ অর্পিতা ঘোয। ওই সভা করার জন্য কোনও অনুমতি নেওয়া ছিল না বলে নালিশ ওঠে। বৃহস্পতিবার সকালে বাম-কংগ্রেস জোটের আরএসপি প্রার্থী বিশ্বনাথ চৌধুরীর কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়ে জেলা প্রশাসনের তরফে তদন্তে ঘটনার সত্যতা মেলে। এরপরই সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী অফিসার ওই সভার আয়োজক হিলির তৃণমূল ব্লক সভাপতি এবং সম্পাদককে শো-কজের নোটিশ পাঠিয়েছেন।
তবে গত ৪ এপ্রিল হিলির বিনশিরা এলাকায় রাত ৮ টা নাগাদ স্থানীয় আরএসপি নেতা রথীন সরকারের গাড়ি রাস্তায় আটকে তৃণমূলকর্মীদের বিরুদ্ধে হেনস্তা ও অবৈধ ভাবে গাড়িতে তল্লাশি চালানোর অভিযোগের ঘটনায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন জোট নেতারা।
জোট প্রার্থী বিশ্বনাথ চৌধুরী অভিযোগ করেন, ‘‘দেশের সাংসদরা আইন তৈরি করেন। সেখানে নির্বাচন কমিশনের আইনকে ভেঙে একজন সাংসদ পথসভা করছেন। এর থেকে বোঝা যা, এরা কতটা উদ্ধত। তৃণমূল করি বলে কোনও কিছুকেই মানবো না এ রকম মনোভাব ওঁদের।’’ সাংসদ অর্পিতা ঘোষ বলেন, ‘‘অনুমতি ছিল। র্যালির সঙ্গে পথসভার অনুমতি যুক্ত ছিল। তবে শো-কজ করেছিল। তার উত্তরও দেওয়া হয়েছে। বিশ্বনাথবাবু হেরে যাবেন বলে এ সব করছেন।’’
হিলি ব্লকের বিনশিরা এলাকায় আরএসপির জোনাল সম্পাদক রথীনবাবু ট্যাক্সি নিয়ে প্রচারসভায় যোগ দিতে যাওয়ার সময় পারপাড়ার কাছে তৃণমূল কর্মীরা গাড়িটিকে আটকান বলে অভিযোগ। এরপর দলটি তাঁকে গাড়ি থেকে নামিয়ে তল্লাশির নামে হেনস্থা করে বলে রথীনবাবু নির্বাচন আধিকারিকের কাছে ৫ জন তৃণমূল কর্মীর নাম দিয়ে সঙ্গে আরও অনেকজন ছিল বলে লিখিত অভিযোগ করেন। এ দিন বিষয়টি নিয়ে বাম ও কংগ্রেস নেতারা সরব হন। জেলা কংগ্রেস সভাপতি নীলাঞ্জন রায় বলেন, ‘‘অনুমতি নিয়ে রথীনবাবু জোটের সভায় যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। গাড়ি তল্লাশি করতে হলে নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধিরা করবেন। রাস্তায় গাড়ি আটকে তল্লাশি করার এক্তিয়ারও কি তৃণমূলের?’’
বিষয়টি নিয়ে এদিন হইচই হতেই ওই ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট দিয়ে হিলি থানার এসআই সুশান্ত পাল গাড়ি আটকানোর ঘটনা সত্যি বলে উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারকে জানিয়েছেন, অবৈধ ভাবে গাড়ি আটকে তল্লাশি চালানো হলেও রথীনবাবুকে অবশ্য শারীরিক নিগ্রহ করা হয়নি। তবে অভিযুক্ত শাসক দলের পাঁচ জনের বিরুদ্ধে ১০৭ ধারায় মামলা রুজু করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে।