ট্রেড লাইসেন্স নবীকরণ সহজ হোক, শর্ত অমুর

ট্রেড লাইসেন্স নবীকরণ করতে ব্যবসায়ীদের হেনস্থা হওয়া নিয়ে এ বার সরব হলেন নির্দল কাউন্সিলর অরবিন্দ ঘোষ। বামেরা তাঁর সমর্থন নিয়ে শিলিগুড়ি পুরবোর্ড গড়ছে বলে শনিবার বৈঠক করে জানিয়েও দেয়। এ দিন বামেদের সমর্থন প্রসঙ্গে অরবিন্দবাবু যে শর্ত দিয়েছেন তাতেও তিনি পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে ট্রেড লাইসেন্স সরলীকরণের দাবি জানিয়েছেন। ট্রেড লাইসেন্স নবীকরণ করতে আধিকারিকেরা আচমকা কেন জটিলতা বাড়িয়েছেন তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন অরবিন্দবাবু।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৫ ০১:৩১
Share:

ট্রেড লাইসেন্স নবীকরণ করতে ব্যবসায়ীদের হেনস্থা হওয়া নিয়ে এ বার সরব হলেন নির্দল কাউন্সিলর অরবিন্দ ঘোষ। বামেরা তাঁর সমর্থন নিয়ে শিলিগুড়ি পুরবোর্ড গড়ছে বলে শনিবার বৈঠক করে জানিয়েও দেয়। এ দিন বামেদের সমর্থন প্রসঙ্গে অরবিন্দবাবু যে শর্ত দিয়েছেন তাতেও তিনি পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে ট্রেড লাইসেন্স সরলীকরণের দাবি জানিয়েছেন। ট্রেড লাইসেন্স নবীকরণ করতে আধিকারিকেরা আচমকা কেন জটিলতা বাড়িয়েছেন তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন অরবিন্দবাবু। তিনি বলেন, ‘‘ট্রেড লাইসেন্সে নবীকরণ করার ক্ষেত্রে আধিকারিকেরা আচমকা নতুন নিয়ম চালু করছেন। বাসিন্দারা কেউ কিছুই জানছেন না। তাঁদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। নতুন ট্রেড লাইসেন্স তৈরি বা নবীকরণ সব ক্ষেত্রেই সরলীকরণ দরকার।’’ উল্লেখ্য, বর্তমানে ট্রেড লাইসেন্স বিভাগের দায়িত্বে রয়েছেন পুরসচিব সপ্তর্ষি নাগ। তিনি জানিয়েছিলেন, পুর কর আদায়ের সুবিধার্থে এবং ব্যবসায়ীদের নথিপত্র যথাযথ রয়েছে কি না দেখতে ১ এপ্রিল থেকে নতুন নিয়ম লাগু করা হয়েছে। তা নিয়েই হেনস্থার অভিযোগ তুলেছেন ব্যবসায়ীরা। সপ্তর্ষিবাবু এ দিন বলেন, ‘‘নতুন পুরবোর্ড যে সিদ্ধান্ত নেবে সে ভাবেই চলবে।’’ ১ এপ্রিল থেকে ট্রেড লাইসেন্স নবীকরণ করতে বাড়ির কর জমা দেওয়ার রসিদ-সহ নানা ধরনের নথি জমা করতে বলা হয়েছে। আগে পুরনো ট্রেড লাইসেন্স জমা করে নির্দিষ্ট ফর্মে নবীকরণের আবেদন করলেই হতো। এক দিনেই লাইসেন্স নতুন হত। কেন আচমকা নিয়ম বদলে শহরের ব্যবসায়ীদের এই রকম পরিস্থিতির মধ্যে ফেলা হয়েছে তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন অরবিন্দবাবু।

Advertisement

সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিলিগুড়ি পুরসভার তৃণমূলের নেতা নান্টু পালও। আধিকারিকদের একাংশের ইচ্ছেতে ট্রেড লাইসেন্স নবীকরণের নিয়ম আচমকা বদলে দেওয়ায় ব্যবসায়ীদের যে ভাবে বিপাকে পড়তে হচ্ছে তা বরদাস্ত করা হবে না বলে তিনি এ দিন জানিয়ে দেন। নান্টুবাবু জানান, শিলিগুড়ি ব্যবসার শহর। তা ছাড়া ট্রেড লাইসেন্স কোনও মালিকানার নথি নয়। এক জন হকারও তা পেতে পারেন। তিনি বলেন, ‘‘ট্রেড লাইসেন্স নবীকরণের জন্য কর মেটানোর রসিদ জমা করতে চাপ দেওয়ার বিষয়টি ঠিক নয়। আধিকারিকদের একাংশ এটা করেছেন। এটা বরদাস্ত করা হবে না। কর আদায়ের জন্য আলাদা শিবির করতে হবে। কলকাতাতে অনলাইন ব্যবস্থায় ঘরে বসেই ব্যবসায়ীরা লাইসেন্স নবীকরণ করেন। এখানেও তা চালু করতে হবে।’’

পুর কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়া বলেন, ‘‘ব্যবসায়ীদের সুবিধার বিষয়টি অবশ্যই গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।’’ বর্তমানে পুরসভায় কোনও বোর্ড নেই। প্রশাসকও নেই। পুরসভা সূত্রেই জানা গিয়েছে, গত পুরবোর্ডে লাইসেন্স বিভাগের মেয়র পারিষদ থাকার সময় দেবশঙ্কর সাহা সরলীকরণের কথাই জানিয়েছিলেন। আচমকা নিয়ম বদল করা নিয়ে ক্ষুব্ধ তিনিও। ১ এপ্রিল থেকে ট্রেড লাইসেন্স নবীকরণের জন্য যে ভবনে কারবার রয়েছে চলতি বছর পর্যন্ত তার কর মিটিয়ে দেওয়ার রসিদ জমা করতে হবে। ভাড়া হলে তার রসিদ এবং নো-অবজেকশন সার্টিফিকেট দিতে হবে। মালিকের কর বকেয়া থাকলে আবেদনকারীকে তা জানাতে হবে।

Advertisement

এ সব জটিলতার কারণে লাইসেন্স, নবীকরণ করতে দু’সপ্তাহেরও বেশি সময় লাগছে বলে অনেকে অভিযোগ করেন। ব্যবসায়ীদের একাংশের অভিযোগ, এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কয়েক জন ব্যক্তি পুরসভার কর্মী বলে পরিচয় দিয়ে বাড়তি টাকাও দাবি করছেন। তাড়া থাকায় অনেকে অবৈধ ভাবে টাকাও দিচ্ছেন। পুরসভার কর্মী, আধিকারিকদের একাংশ তাতে জড়িত বলে তাঁরা অভিযোগ তুলেছেন। কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন মেয়র পারিষদ দেবশঙ্করবাবু বলেন, ‘‘বর্তমানে ওই বিভাগের দায়িত্বে রয়েছেন পুরসভার সচিব। তিনিই এ সব করছেন বলে শুনেছি। তাতে ব্যবসায়ীদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে। প্রয়োজনে আমরা আন্দোলনে নামব।’’ উত্তরবঙ্গের বৃহত্তর ব্যবসায়ী সংগঠন ফেডারেশন অব চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, নর্থবেঙ্গল (ফোসিন)-এর সম্পাদক বিশ্বজিৎ দাস জানান, ট্রেডলাইসেন্স নবীকরণ করাতে গিয়ে ব্যবসায়ীদের হেনস্থা হতে হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘আপাতত যাঁদের ট্রেড লাইসেন্স নবীকরণ জরুরি নয় তাঁদের অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে। নতুন বোর্ড হলেই আমরা বিষয়টি নিয়ে কতর্পক্ষের কাছে যাব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement