বিপন্ন: চিকিৎসাধীন শিশুকে এক্স-রে করাতে নিয়ে যাচ্ছেন মা। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে। নিজস্ব চিত্র।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে শিশুমৃত্যু চলছেই। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত ফের ৪টি শিশু মারা গিয়েছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, তার মধ্যে একজন জ্বর এবং শ্বাসকষ্ট নিয়ে মারা গিয়েছে। বাকিদের মৃত্যুর কারণ অন্য। তার মধ্যে মাঝে একদিন কম থাকার পর এদিন ফের অন্তত ৪টি শিশু রেফার হয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ভর্তি হয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতাল থেকে ৩টি ও মালবাজার মহকুমা হাসপাতাল থেকে একটিকে রেফার করা হয়েছিল। এ দিন সব মিলিয়ে শিশু বিভাগে ৪১ শিশুকে ভর্তি করানো হয়েছে। তার মধ্যে ৪টি শিশু উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছে। সব মিলিয়ে শতাধিক শিশু ভর্তি রয়েছে।
পুজোর মধ্যে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় চিন্তিত চিকিৎসকদের একাংশ। পুজোর সময় এমনিতেই চিকিৎসক কম থাকেন। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, পুজোর দিনগুলোর জন্য আলাদা করে রোস্টার তৈরি করা হচ্ছে। বা পরিষেবার খামতির কোনও কারণ নেই। হাসপাতাল সুপার সঞ্জয় মল্লিক জানান, পুজোর সময় বলে পরিষেবায় সমস্যার কোনও ব্যাপার নেই। পুজোর দিনগুলোতে কারা ডিউটিতে থাকবেন সে সবের আলাদা ব্যবস্থাও করা হবে।
অন্যদিকে, জ্বর ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত ১০৯টি শিশু ভর্তি জলপাইগুড়িতে। ভর্তি থাকা দুই শিশুর অবস্থা খুবই সঙ্কটজনক বলে দাবি হাসপাতালের। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে পাঠানো এক শিশুকে ভর্তি না নিয়ে ফেরত পাঠানোর পর থেকে মেডিক্যালে আশঙ্কাজনক শিশুদের পাঠানোর সংখ্যা আগের চেয়ে অনেকটাই কমেছে। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার বিকেল পর্যন্ত হাসপাতাল থেকে তিনটি শিশুকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে।
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, জলপাইগুড়িতে শিশুদের অত্যাধুনিক চিকিৎসার তেমন সুবিধা না থাকায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে পাঠানো হচ্ছে। জলপাইগুড়িতে পিকু এখনও পর্যন্ত চালু হয়নি। অথচ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে শিশুদের ভর্তি না নিয়ে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। উল্লেখ্য, ১ অক্টোবর মাঝ রাতে জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতাল থেকে সঙ্কটজনক একটি শিশুকে মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছিল। ওই শিশুকে হাসপাতাল থেকে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালের আউটডোরের শিশু বিভাগ ও জরুরি বিভাগে এদিনও জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে আসা শিশুদের ভিড় ছিল যথেষ্টই। এ দিন বিকেল পর্যন্ত ২২টি শিশুকে ভর্তি করানো হয়েছে হাসপাতালে। ছুটি দেওয়া হয়েছে ১৫টি শিশুকে ।
সুপার গয়ারাম নস্কর বলেন, ‘‘শিশু চিকিৎসায় কোনও ত্রুটি রাখা হচ্ছে না। পরিকাঠামোর মধ্যেই সব ধরনের পরিষেবা দিতে চেষ্টা করছেন চিকিৎসক ও নার্সিং স্টাফেরা।’’